Wednesday, January 31, 2007

একটি প্রাণবন্ত রাজনৈতিক আলোচনা:

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে একটি প্রাণবন্ত আলোচনা সমপ্রতি প্রচারিত হয়েছে ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা অনুষ্ঠান হ্যালো ওয়াশিংটনের উদ্যোগে৷ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইকবাল বাহার চৌধুরী৷ এতে অংশগ্রহণ করেন বজলুর রহমান, সম্পাদক সংবাদ, ড: জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয় ও ড: এহতেশাম চৌধুরী৷ এরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ অঙ্গনে স্বনামধন্য৷ শ্রোতাদের অংশগ্রহণে প্রশ্নোওরের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ মিনিটের অনুষ্ঠানটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাদেরকে ভাবার সুযোগ দেয়৷ রিয়েল প্লেয়ারে অনুষ্ঠানটি শুনতে হলে কিক করুন: কারেন্ট সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ

নিয়মিত পড়ুন বাংলা গ্রুপ ব্লগিং দেশীভয়েস

Saturday, January 27, 2007

কন্ঠরোধ কেন?

(দেশীভয়েসে এক সাথে প্রকাশিত)
দেশে জরুরী আইন জারির দু'সপ্তাহ পরে হঠাত্‍ করে গণমাধ্যমের গলা চিপে ধরা হলো কেন তা আমরা অনেকেই জানি না৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেক ভাল উদ্যোগ নিচ্ছেন এ নিয়ে জনমনে কোন সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না৷ লোক দেখানো উদ্দেশ্যে অথবা আগাগোড়া সংস্কারের দুরূহ ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে যদি সরকার কোমড় বেঁধে মাঠে নামে তাহলে বলবো উদ্দেশ্য পুরোটা সত্‍ না৷ রাজনৈতিক অথবা সামাজিক সংকট এমন কোন বিপর্যয়কর অবস্থায় নামেনি যে হঠাত্‍ করে গণমাধ্যমের উপর বিশাল খবরদারি ও নজরদারি জারি করতে হবে৷ জনগণ নীরব হলেও বোকা নয় এটা সরকারের বোঝার দরকার আছে৷

সামহোয়্যার ইন-এ আমরা যারা ব্লগাই সেখানেও বিধিনিষেধের হুমকি অত্যন্ত হাস্যকর৷ অনেকেই সামহোয়্যার ইন-এ তাদের কথা প্রকাশ না করে অন্য ইন্টারনেট মাধ্যম বেছে নেবে- তা বোঝার মতো বুদ্ধিমত্তা সরকারের নীতিনির্ধারকদের আছে কি-না তা আমি জানি না৷ চোখ বন্ধ করে আর কন্ঠরোধ করে সরকার যদি মুক্ত চেতনাকে ধ্বংস করতে চায় তাহলে তারা কেবল পূর্বসূরীদের পথই অনুসরণ করবে৷ দেশ দুর্নীতিমুক্ত হোক, সন্ত্রাস নিপাত যাক৷ এসব ব্যাপারে কোন আপত্তি কারও নেই৷ কিন্তু রেখে ঢেকে আর আড়ালে আবডালে যখন অপারেশন চলে তখন তা হারায় স্বচ্ছতা আর বৈধতা৷ সেখানে দুর্নীতির ফাঁক ফোকর থেকেই যায়৷ বিগত সরকারের আমলে র‌্যাবের মাধ্যমে যে রাস্ট্রীয় সন্ত্রাস চলেছে তা যদি আরও ব্যাপকতর আকার ধারণ করে তখন সরকার তার আচরণের নৈতিক ভিত্তি হারাবে৷

গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের উপর নিয়ন্ত্রন চাপিয়ে আমাদের স্বাধীন চিন্তা ভাবনাকে অবরুদ্ধ করা যাবে না৷ এধরনের আচরণ বিগত সামরিক জান্তার নির্যাতনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ আশা করি, সরকার তাদের এই জরুরী বিধি নিষেধ সাময়িক ও স্বল্পকালীন সময়ের জন্য বলবত্‍ রাখবেন৷ এর পটভূমিও জনগণের জানার অধিকার আছে৷ সুস্থ নির্বাচনের জন্য স্বাধীন মতামত ও ভাবনা প্রকাশের সুযোগকে সংকুচিত না করে তা অবারিত করে দেওয়ার দরকার৷ তাই, সরকারের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই আমি নিজে৷ আপনাদেরকেও এই প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার আহবান জানাই৷ আশা করি, জনগণ অবিলম্বে তাদের স্বাধীন ভাবনা প্রকাশের সুযোগ পাক৷ কারণ, জনগণের কন্ঠরোধ করা স্বৈরাচারী আচরণের প্রতীক৷ আর স্বৈরাচারের ধ্বনি শুনলে নুর হোসেনরা যে আবারও জেগে উঠবে৷

নির্বাচন নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট:

(আড্ডার ইংরেজী ভার্সনে প্রকাশিত)
জানুয়ারীর ২৫ তারিখে ওয়াশিংটন পোস্টে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে৷ বাংলাদেশে আশু নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা নেই৷ নির্বাচন কমিশন, ভোটার লিস্ট ও প্রশাসনিক সংস্কার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের প্রয়োজন৷ জরুরী আইন জারির ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর কৃতিত্ব খুব দ্রুত হারিয়ে যাবে যদি আশু নির্বাচন না হয়৷ ওয়াশিংটন পোস্টটির প্রতিবেদন বাংলাদেশে সামরিক বাহিনীর অতীতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেছে৷ সামরিক আইন আর জরুরী আইনের আওতায় যে মানবাধিকার লাঘব হতে থাকে তা আলাদা করে বলার দরকার হয় না৷

নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার পেছনে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতিবেদনটির মূল উপজীব্য৷ জানুয়ারীর ১১ তারিখে ঘোষিত জরুরী আইন যদি দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনকে বিলম্বিত করে তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ প্রকট হয়ে উঠবে৷ জরুরী অবস্থায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ হওয়ার সুযোগে মৌলবাদী শক্তি ধমীয় প্রতিষ্ঠানভিত্তিক উন্মাদনা ছড়াতে পারে বলে যে আশঙ্কা পোস্টের প্রতিবেদনটির উপসংহারে টানা হয় তা অমূলক নয়৷ প্রয়াত রাস্ট্রপতি জিয়ার সামরিক আইনের শাসনামলে যে মৌলবাদী জামাতীদের পুনার্বিভাব ও প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা ভুলে যাওয়া উচিত না৷ রাজনৈতিক অধিকার ও স্বচ্ছতা না থাকলে যে আন্ডারগ্রাউন্ড ও জঙ্গী রাজনীতি বাড়তি শক্তি ও উত্‍সাহ পায় তার জন্য কোন আলাদা গবেষণার দরকার নেই৷

Friday, January 12, 2007

মহামান্য গবা জলহস্তীর বন্দনা:

ছবি: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

(দেশে জরুরী আইন চলছে। তাই আপাতত রাজনীতি নিয়ে নাড়াচাড়া বন্ধ। আপনাদের জন্য রঙ্গদেশের রাজগল্প নিয়ে এই গাতক হাজির)

বহুদিন পর গাতক আবার লিখতে বসলো। রঙ্গদেশে এখন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অনুরাগী বলতে গেলে নেই। তাই গাতক অন্ধকার রাতের অলস অবসরে সঙ্গীত বাদ দিয়ে রাঙ্গাবুড়ীর গল্প ফেঁদে বসল। গেলবার ব্লগরাজ্যে তার বান্দরের কেচ্ছা পড়ে লোকজন অনিন্দ্য আনন্দ পায়। তারপর থেকে গল্প লেখার কচলানি লেগেই আছে। অবশ্য গাতকের ঠিক আজকেই গল্প লেখার কথা ছিল না। রাতের বেলা ব্লগ পাড়ায় কিছু শাখামৃগ ও নেকড়ের হৈ হুল্লোড়ে গাতকের ঘুম ভেঙ্গে যায়।

ঢুলুঢুল চোখে দক্ষিণা জানালা খুলে গাতকের আক্কেলগুড়ুম। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে গুটিকয়েক নেকড়ে বসে ব্লগের চৌরাস্তায় জটলা বেঁধেছে। নিতান্ত কৌতুহূলী হয়ে তাকিয়ে দেখে নেকড়েরা শোকে কাতর। তারপরেও গুণগুণ করে তাদের মহামান্য গবা জলহস্তীর প্রশস্তি গাচ্ছে। কি হয়েছে, কি হয়েছে? ভিনদেশী গাড়োয়ানদের ঘোড়ার শকটের নীচে পড়ে নেকড়ে দলের আদরের তান্ত্রিক শশকটি মারা গেছে। তারপরেও নেকড়েরা উল্লসিত। কারণ, গাড়ী চাপায় মৃত শশকটির শরীর থেতলে গেলেও চক্ষু একটিও নাকি খোয়া যায়নি। হায়রে নির্বোধের দল!!! এই মাসের বাইশ তারিখে এই পবিএ শশকটিকে রাজবেদীতে উৎসর্গ করে ছলেবলে কৌশলে রাজমহির্ষী রাঙ্গাবুড়ীর রাজসিংহাসনে বসার কথা ছিল। এখন এই শশকের অকাল মৃত্যুতে তারাও প্রমাদ গণনা শুরু করল। সব্বোনাশ, তারপর?

হায়রে রঙ্গদেশ। এখানে রংয়ের শেষ নেই। রাজমহির্ষী রাঙ্গাবুড়ী ষোলকলায় পারদশী। গেলবার নরখাদক নেকড়েদের পাল নিয়ে তিনি রাজ্যপাল তৈরী করলেন। অনেক প্রজাবর্গ এতে ভীষণ ুদ্ধ হয়। সবার প্রশ্ন, যে নেকড়ের পাল পশ্চিমা ভাল্লুকদের সাথে মিলেমিশে লাখো নিরীহ প্রজার রক্তের উষ্ণতার স্বাদ নিলো রাঙ্গাবুড়ী তাদেরকে কিভাবে রাজ্যপালে ঠাঁই দিলেন? তিনি উওর দিলেন, “অতীত নিয়ে নাড়াচাড়া করে গন্ধ ছড়াও কেন”? রাজকীয় সুরে বললেন, “অতীতকে মুছে দাও, তাকাও ঝড়ঝড়া ফকফকা সামনের দিকে। চারদিকে ছড়িয়ে দেব রাজানন্দ, মর্দন করো তেলজল একসাথে”। হতবাক প্রজারা অসহায় দর্শক হয়ে তাকিয়ে দেখল নরখাদক নেকড়েরা শুভ্র মেষকের চর্মধারণ করে দেশসেবক হয়ে গেছে। তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে সম্মোহিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু প্রজাসকল তো আর নির্বোধ নয়?

রাঙ্গাবুড়ী বশ করে রেখেছেন সবাইকে। আগামী বাইশের সূর্যসকালে প্রজাসকলের আশীর্বাদে যে রঙ্গরাজ্য আলোকিত হবে তার সম্ভাবনা সন্তানকে তিনি ভ্রুনেই হত্যা করলেন। তার পোষা মহামান্য জলহস্তী বিশ্বস্ততার সাথে রাজসিংহাসন পাহারা দিচ্ছে। কথামতো বাইশের শুভ্র সকালে যে তান্ত্রিক শশকটিকে উৎসর্গ করে রাজসিংহাসনে বসার কথা আজকে সেই শশকটির অকালমৃত্যু রাজ্যব্যাপী শঙ্কা ও ত্রাসের জন্ম দিয়েছে। গবা জলহস্তী ডেকে পাঠিয়েছেন জলপাই রংয়ের সরীসৃপদের। সবাই ভয় পাচ্ছে এই সরীসৃপরা ডাঙ্গা থেকে জলে ফিরবে কবে? প্রজাবর্গের স্কন্ধ থেকে কবে তারা নামবে? এসব সরীসৃপদের বিশ্বাস করা যায় না। আজকে দেশের মহামান্য গবা জলহস্তী সেই আয়োজন করেছেন। সবাইকে মুখে কুলুপ দিয়ে নীরব নিস্তেজ হয়ে থাকতে বলা হয়েছে। আবারও প্রজারা মৃতদের মতো নিস্তব্দ হয়ে থাকবে। প্রজাদের নীরব শবদেহের উপর রক্তচোষা নেকড়ের দল হয়তো উল্লাসে বিচরণ করবে, জলপাই রংয়ের সরীসৃপরা দন্তবিকশিত করে বিচরণ করবে। এভাবেই হয়তো রঙ্গদেশের প্রজাবর্গ আবার পেছনের দিকে হাঁটতে থাকবে। মাথা গুঁজবে নোংরা ইতিহাসের আবর্জনায়...(চলবে)।

“কিসে কিসে ভাব নেই? ভক্ষক ও ভক্ষে বাঘে ছাগে মিল হলে আর নেই রক্ষা
শেয়ালের সাড়া পেলে কুকুরেরা তৈরি,সাপে আর নেউলে ত চিরকাল বৈরী!...”
সুকুমার রায়

Thursday, January 11, 2007

রাজনৈতিক দুর্যোগের ঘুর্ণিপাকে:

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুর্যোগের ঘনঘটা যা এতোদিন আশঙ্কা করা হচ্ছিল তা আগামী কয়েক সপ্তাহের নির্মম বাস্তবতা হতে যাচ্ছে। মহাঐক্যজোটের তিনদিনের অবরোধের শেষদিনে জানুয়ারীর ৯ তারিখে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ রণক্ষেেএ পরিণত হয় পুলিশ যে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশী মারমূখী তা গত ক’দিনে বেশ পরিস্কার হয়েছে। ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতারা যেভাবে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন আর অবরোধের তীব্রতা প্রমান করে দু’পই বড্ডো অনড়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে পুলিশ এতোটা মারমূখী হার্ডলাইনে কেন? এটা সম্ভব হয়েছে যখন পুলিশ কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত ও আশ্বস্ত হয়েছে যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামাত সরকার যে কোনভাবে আবার ক্ষমতায় ফিরে আসছে। কারণ তত্তাবধায়ক সরকারের প্রথম দিকেও পুলিশ বেশ ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা দেখালেও তার তারা সেই অবস্থান যে ত্যাগ করেছে তা বেশ ভালভাবেই বোঝা যাচ্ছে তাদের আচরণে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে পুলিশ দিয়ে কখনও রাজনৈতিক প্রতিরোধ ঠেকানো যায় না।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা উৎকন্ঠার জন্ম দিয়েছে। এতে জোর করে নির্বাচিত সরকার দেশে ও বাইরে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। তার আলামত ইতোমধ্যে আমরা দেখতে পারছি। নির্বাচন পর্যবেক দলগুলো নির্বাচন প্রত্য করার কোন উৎসাহ আর নেই। সামরিক বাহিনীর সাহায্যে যে খুব সুবিধা হবে না, তার আলামত বেশ ভালভাবেই দেখা যাচ্ছে। বড়ো দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন একটা হাস্যকর প্রহসনে পরিণত হচ্ছে তা বিএনপি-জামাত সরকার দেরীতে হলেও বুঝতে পারছে। কিন্তু সময় যে তাদের অনুকূলে আর নেই তা কি তারা বুঝতে পারছে? নির্বাচন যতো বিলম্বিত হবে তারা তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ততো হারাবে। অন্তর্কলহ ততো বাড়বে। সাধারণ মানুষও ধৈর্য হারাতে থাকবে।

দু’টি প্রধান জোট আলোচনার মাধ্যমে প্রথম থেকে নির্বাচন ও তত্তাবধায়ক সরকার সংস্কারের স্বার্থে কাজ করলে দেশ এরকম বিপর্যয়ের দিকে যেতো না। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোটের একগুঁয়েমী ও ধান্ধাবাজির ফলে যে সংকট তৈরী হলো তার ভোগান্তি কিন্তু জনগণকেই পোহাতে হচ্ছে। বিএনপি যে কূটকৌশলের মাধ্যমে দায়সারা নির্বাচন করে পার পাবে না তা তারা বেশ হাড়ে হাড়ে টের করতে পারছে। বিএনপি-জামাত জোট যে তাদের রাজনৈতিক দাবা খেলায় দূরদর্শিতা দেখাতে পারেনি তা খুবই স্পস্ট। তাই বর্তমান সংকটে বিএনপি জামাত জোট তাদের পায়ের নীচ থেকে দ্রুত মাটি হারাচ্ছে।

(একই সাথে প্রকাশিত হলো সামহোয়্যার ইন ব্লগেআড্ডার ইংরেজী ব্লগে)

Saturday, January 06, 2007

সংকটের উওরণ কোথায়:

বিএনপি জামাত জোট নির্বাচন কমিশন ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারকে দলীয়করণ করেছে মতার প্রথম দিক থেকে। বিএনপি জোট প্রথম থেকেই নির্বাচনকে নিজেদের মতো সাজাতে গিয়ে এর স্বচ্ছতা ও নির্দলীয় চরিএকে ুন্ন করেছে। আওয়ামী লীগেরে নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট প্রথম থেকে আজিজ আর হাসান নিয়ে যে আপত্তি জানিয়ে আসছিল তাকে কূটকৌশলে সময় পেনের মাধ্যমে সংকটটি তত্ত¡াবধায়ক সরকারের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে মতা থেকে সরে দাঁড়ায়। অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে যে অর্ধশত মানুষ প্রাণ হারালেন তার মূল কারণ বিএনপি-জামাত জোটের রাজনৈতিক ধান্ধাবাজি। রাজনৈতিক সংকট ও অচলাবস্থাকে একটি বিপজ্জনক মোড় নেয় যখন বিচার বিভাগে বিএনপি’র রাজনৈতিক প্রভাব স্পস্ট হয়ে দাঁড়ায়। ঘটনার পরম্পরা বিএনপি’র রাজনৈতিক প্রভাবকে খুব স্পস্ট করে দেয়।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট রাজনৈতিক কূটকৌশলে যে বেশ কয়েকবার ধরাশায়ী হয়েছে তা খুব সহজেই বোঝা যায়। বিএনপি জোট যখন নির্বাচন প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন আওয়ামী লীগ আন্দোলনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের নিরপেতার জন্য ব্যস্ত। কিন্তু এর ফলাফল বিএনপি যেভাবে মাথায় হাত বুলিয়ে গোলায় ধান তুলবে তা ভেস্তে যাওয়াতে একটু বেকায়দায় পড়ে আছে। নির্বাচন যতো বিলম্বিত হবে তাতে সাংবিধানিক সংকটের চেয়ে বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নির্বাচনী ব্যয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে তা সবাই জানে। বিএনপি ছলে বলে কৌশলে নির্বাচনী বৈতরণী পার পাবে এবং প্রয়োজনে জামাতকে বিরোধী দলে অলঙ্কৃত করবে সেই কৌশল এখন বেশ স্পস্ট হয়ে উঠেছে। বিএনপি’র এই একগুঁয়েমীর মাশুল আগেও দিয়েছে এবং এবার আরও মারাত্মকভাবে দিবে তা দেখার জন্য বেশীদিন অপেক্ষা করতে হবে না।

(চলবে- বাকী অংশ আসছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে। এর পরের অংশে থাকবে রাজনৈতিক দরকষাকষিতে কে জিতল কে হারল। নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা কি হবে? আওয়ামী লীগ কি ঠিক পথে যাচ্ছে? রাজনীতিতে কি মেরুকরণ স্পস্ট হচ্ছে---অপেক্ষা করুন)

সামহোয়্যার ইন ব্লগে সংকট কি পরিকল্পিত?

ব্লগের অবস্থা যাচ্ছে তাই। নোংরামি চলছে। ইচ্ছে মতো নিক নেইম নিয়ে পোস্ট চলছে। এক ধরণের অসুস্থতা ও অপরিচ্ছন্নতার ছড়িয়ে সুস্থ মননকে নির্বাসনের অপচেস্টা চলছে। নেপথ্যের কারণ বের করার কোন ইচ্ছে বা রুচি আমার নেই। তবে অপচেস্টা যে খুব ইচ্ছাকৃত ও সুপরিকল্পিত তা স্পস্ট হয়ে উঠছে। এর প্রতিকার নিয়ে নির্বিকার ও নিরাসক্ত মনোভাব বেশ রহস্যজনক ও আপওিকর। যারা নিয়মিত আড্ডা পড়েন তাদেরকে অনুরোধ জানাব আমার ইউনিকোড বাংলা ব্লগে গিয়ে পড়তে। আমি চেস্টা করব আড্ডার পোস্ট ব্লগস্পটে একইসাথে প্রকাশ করতে।

আপনাদের জন্য আড্ডার ঠিকানা হচ্ছে: ইউনিআড্ডা

তবে নেকড়ের গল্প ফেঁদে আপাতত সুবোধ ও অবোধ নিরীহ হরিণ শিকার করার কোন ইচ্ছে আমার নেই। পর্দার আড়ালে থাকা অনেক ব্লগারদের অবস্থানটা ঝোপের আড়ালে নেকড়ের চেয়ে যে কম হিংস্র নয় তা আচরণে আর গর্জনে বেশ দৃশ্যমান হয়ে উঠে। আকেলমন্দদের জন্য ইশারাই যথেস্ট। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের নামে ইচ্ছেমতো মডারেশনের একটা সুপ্ত খায়েশ অনেকের নাফসকে বেশ নাড়া দিয়ে থাকতে পারে। অন্তত: নোংরামী ছড়িয়েও যদি তাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। অনেকে যে এখানে ব্লগকে নিজস্ব আদর্শ ও অন্ধত্ব প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন এবং সেই ল্েয একচ্ছএ আধিপত্য বজায় রাখার অপকৌশল হিসেব স্ক্যায়ার ট্যাকটিক ব্যবহারে পারদর্শী হয়ে উঠছেন তাও বেশ দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। বালসুলভ প্রগলভতায় যে দূরদর্শিতা ও বুদ্ধিমওার ছাপ থাকে না এবং এটা যে বেশ হাস্যকর হয়ে উঠে তা ইনিয়ে বিনিয়ে বলার দরকার নেই।

অনেকেই এখানে বিশেষ ফোরাম তৈরী করে নিজস্ব জনপ্রিয়তা ও রাস্তার দাঙ্গাবাজি ছড়াতে চাচ্ছে তা খুব স্পস্ট। অনেক দিন আগে এক সিনিয়র ভাইকে বললাম ব্লগে আসতে। তার অভিজ্ঞতা যে সুখপ্রদ ছিল না তা পরে জানতে পারলাম। তিনি জানালেন এগুলো তো টীন এজারদের বাঁদরামির জায়গা। সিরিয়াস লেখার চেয়ে গালাগালি আর মৌলবাদীদের আখড়া। কথা যে একেবারে মিথ্যে তা নয়। অনেকেই তাদের রাজনৈতিক মিশনের অফিসের মতো ২৪ ঘন্টা পাহারা দিয়ে বসে থাকেন তারা কি করেন আমার জানার দরকার নেই। কিন্তু তার ফলাফল যে নোংরা কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে ত বোঝা খুবই কস্টকর নয়। এখানে যারা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে নিয়মিত লেখেন তাদের লেখাগুলো চাপা দিলে অনেকের মিশন হয়তো একটু সহজতর হয়ে পড়ে। এধরণের দিবাস্বপ্ন যারা দেখছেন তাদেরকে ভীষণভাবে হতাশ হতে হবে।

বাংলা ব্লগের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা এর লেখার বৈচিএ্যে ও ভাবনার বৈপরীত্যে। একে একমূখী করে খুব একটা অর্জন না হলেও বিটিভি’র নতুন সংস্করণ হিসেবে ব্লগ জগতে এর বিস্তৃতিতে অনেকে কামিয়াবী কামিয়াবী বলে চীৎকার করতে পারেন। বিকারগ্রস্থ মানুষদের বিকৃতির শেষ নেই। আর তাকে উৎসাহ আর বাহবা দেওয়ার লোকেরও অভাব দেখি না। নোংরা জিনিসে মন্তব্য দিয়ে একে প্রথম পাতায় স্থান করে দিয়ে অনেকে বেশ আনন্দ পান। বিকৃতির পেছনে অন্ধ প্রবৃওি কাজ করে। কাজ করে পেছনে হাঁটার চেস্টা। যারা সত্যের মুখোমুখি হতে খুব ভয় পান তারা আড়ালে আবডালে থেকে ডাল পালা নাড়া দিয়ে তৃপ্তি পেতে চান। আজকাল প্রত্যাশার সীমান্ত খুব সংকুচিত। কারণ, অনেক নীরবতা সম্মতির প্রচ্ছন্ন প্রকাশ। হয়তো এর সমান্তরালে রয়েছে পৃষ্ঠপোষকতা। কারণ বজ্রপাতে যখন কুম্ভনিদ্রা ভাঙ্গে না, তখন তা ইচ্ছেকৃত বললে কি খুব ভুল বলা হয়?