Tuesday, July 31, 2007

৭১'এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার:

আজকের বিবিসির সকালের অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক শাহরিয়ার কবির এক সাক্ষাৎকারে জানান, মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বিচার বিভাগ বাংলাদেশের ৭১'এর ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে আশ্রয় গ্রহণকারী যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তথ্য প্রমাণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। জনাব কবির বর্তমান সামরিক প্রধানের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবার কথা উল্লেখ করে আশাবাদ প্রকাশ করেন যে বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে একটি কমিশন গঠন করবে। তাহলে শুনুন মূল সাক্ষাৎকার পর্বটি:
Get this widget | Share | Track details

Monday, July 30, 2007

জামাত নেতা নিজামীর একটি প্লট:


কেঁচো খুড়তে গিয়ে অনেক সময় সাপ বেরিয়ে আসে। জামাতের নেতা নিজামী বিশেষ বরাদ্দে রাজউকের প্লট পেয়েছেন। আজ ৩০শে জুলাইয়ের প্রথম আলোতে খবরটা অনেকের কাছে চমক দিলেও আমি একটুও অবাক হইনি। ধর্ম ব্যবসায়ী দলের প্রধান জামাত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর একটা প্লটের খবর অতি সামান্য ব্যাপার। যে দেশে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির বাণিজ্য চলেছে তাতে ৫ কাঠার বনানীর প্লট নস্যি মাত্র। নিজামী-মুজাহিদ ইনক্ জামাতের লেবাসে সমাজ কল্যাণ আর শিল্প মন্ত্রণালয়ে যে অশুভ জামাতী প্রভাব প্রতিপত্তির চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে গেছে তার হিসেব কষবে কে? তেজগাঁও শিল্প এলাকার কোটি কোটি টাকার মূল্যের জমি নাম মাত্র মূল্যে তিনি দান করেছেন সেই ঘটনা এখন কি আর কারও মনে আছে? শিল্প মন্ত্রীর ভাগ্নে মামার সুপারিশ কব্জা করে লোহা লক্কর ব্যবাসায়ী মিজানুর রহমানের ২৫ লাখ টাকা লোপাট করে দিয়েছে সেই খবর ক'জনে মনে রাখবে। বরং সদাশয় সরকার একজন রাজাকার ঘাতক নিজামীর জন্য সহানুভূতির বন্যা বইয়ে দিবে। নিজামীর কুকর্মের শ্বেত পত্র কেউ দেখবে না, দুদকেও কোন মামলা উঠবে না। এভাবেই পার পেয়ে গেছে যুদ্ধাপরাধী ঘাতকের দল। সামনের দিকেও পার পেয়ে যাবে।

গত ৪০ বছরে নিজামী কোন বাড়ীর মালিক হতে পারেননি বলে বিএনপির বদান্যতায় নিজামী প্লট পেয়েছেন। সেখানে এই দুর্মূল্যের বাজারে ছ'তলা বাড়ী উঠছে। প্রতি শুক্রবার তার স্ত্রী আর ছেলে গিয়ে দেখভাল করে আসেন। এখন রাজউক দাবী করছে, "তারা কিছু জানে না"। কারণ, তাদের দাবী, কুকর্মটি করেছে মন্ত্রণালয়। তবে এই নজরানার কারণ হিসেবে কাগজপত্রে বলা হয়েছে, "রাস্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদানের জন্য নিজামীকে এই প্লট দেওয়া হলো"। সরকারের কর্তাব্যক্তিরা চোখের মাথা খেয়ে চেয়ারে বসেন। উপদেস্টা ব্যরিস্টার মঈনুল হোসেন স্মরণ করতে পারেন না,
ঘাতক মুজাহিদ কে? উপদেস্টা জেনারেল মতিন ভাবতেই পারেন না, "জামাতীরা কোন দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকতে পারে"। এভাবেই এক মঈনুল আর এক মতিনের সাফাই সাক্ষীতে কি লাখো শহীদের রক্ত রঞ্জিত নিজামী মুজাহিদরা কি রেহাই পাবে ইতিহাসের নিষ্ঠুর কাঠগড়া থেকে?

হয়তো একজন
ইমরান ফারুকের লেখায় উঠে আসবে দশ ট্রাক অস্ত্র পাচারের নেপথ্য নায়ক তদানীন্তন শিল্প মন্ত্রী নিজামীর কথা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে জাতীয় সেনশেসন তৈরী করা অনেক সহজ যখন জামাতী আমলনামা আমরা ভুলে যাই। হয়তো একজন সাজ্জাদ জহির যখন ইতিহাস ঘেঁটে জামাতীদের সাথে সামরিক বাহিনীর সংযোগের বিপজ্জনক সূত্র চোখের সামনে তুলে ধরেন তখনও কি আমরা নির্বিকার হয়ে বসে থাকতে পারি? নস্টদের হাতে সবকিছু চলে যাবে এই অপ্রিয় সত্যের মুখোমুখি না হয়ে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য এই অভাগা জাতি আবারও গর্জে উঠবে এই প্রত্যাশা কি খুব বেশী?

Monday, July 16, 2007

দেশে সামরিক গণতন্ত্র চাই না:

এই মাত্র খবর দেখলাম শেখ হাসিনাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হিসেব খুব সহজ। সকল দূর্নীতির হোতা জাতীয়তাবাদী দলের শীর্ষ নেতারা জেলে গেলেও খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে শেখ হাসিনাকে দিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্য শুরু করায় নতুন করে হিসেব কষার সময় চলে এসেছে। প্রতিবাদ শুরু করতে হবে। গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন শেখ হাসিনা। কারণ, গ্রেফতারের এই নাটকীয় প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিউট্রালাইজ করার চেস্টা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের জন্ম কিন্তু সেনা ছাউনিতে হয়নি। এর শেকড় রয়েছে সাধারণ মানুষদের মধ্যে। বিএনপি বদলে হয়েছিল জাতীয় পার্টি। আবার জাতীয়তার ছাউনিতে ফিরে এসেছে। এখন আবার শুরু হয়েছে জাতীয় সরকারের জল্পনা কল্পনা। কিন্তু মানুষ কি আর এতোই বোকা? সামরিক শাসন বাংলাদেশে নতুন মোড়কে আনা অতো সোজা হবে না। জনগণ ঠিকই বুঝে। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে জনগণ ঠিকই সমুচিত জবাব দেবে।

তাই দেরী করার আগেই বলুন, নিয়ন্ত্রিত ও সেনা ছাউনির প্রবর্তিত গণতন্ত্র চাই না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছে তার বাইরে রাজনীতির নতুন মোড়ক দেওয়ার চেস্টা প্রতিরোধ আমরা করব। খুলে দেব সকল ষড়যন্ত্রের মুখোশ। শুরু হোক প্রতিবাদ। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের এই দুর্দশার পেছনে সামরিক বাহিনীর অযাচিত হস্তক্ষেপ সবসময়ই মূল কারণ ছিল। তাই আজকের সংকটের জন্য তারা কি দায় এড়াতে পারবে? কিছুক্ষণ আগে মতিয়া চৌধুরী ঠিকই বলেছেন, সংস্কারবাদীদের কোণঠাসা ভাব থেকে উতক্রান্তির জন্যই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এটা যে তাদের হাঁটুতে নামা বুদ্ধির কারণেই হয়েছে তা কি আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে হবে? শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে বাধা আর লোক দেখানো হাস্যকর মামলার বহর দেখে তাদের বুদ্ধির তারিফ না করে কি পারা যায়? সাধু সাবধান। সামরিক বাহিনীর বিষক্রিয়া কি হয় তার উৎকৃস্ট উদাহরণ পাকিস্তান। বাংলাদেশে পাকিস্তানী নাটকের পুনরাবৃত্তির দরকার নেই। কারণ, বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়। তাই এখনই সমস্বরে বলুন: সামরিক ছাউনির নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র চাই না। সংলাপের মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সামরিক বাহিনী ব্যারাকে ফিরুক। জনগণ ক্ষেপলে ক্ষমতালোভীদের কপালে ঝাঁটার আশীর্বাদ পড়বে। নব্বই ফিরবে ২০০৭-এ।

শেখ হাসিনা গ্রেফতার?

বাংলাদেশে সকাল ৭:৫১ মিনিট। গত রাত থেকে এখানে গুঞ্জন উঠেছিল যে আজ শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হবে। সকল দূর্নীতির জন্য জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা জেলে গেলেও খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে শেখ হাসিনাকে দিয়ে গ্রেফতার শুরু হওয়ার খবর পর্যব্ক্ষকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃস্টি করেছে। দেশী ভয়েসে এ ব্যাপারে ব্রেকিং নিউজ ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছে। এছাড়া, বিবিসির সকালের প্রতিবেদনটি এখানে শুনতে পাবেন:
Get this widget Share Track details

Wednesday, July 04, 2007

এনটিভির বন্দনা:


এনটিভির জন্মদিন নিয়ে বেশ ভাল প্রোগ্রাম চলছে। চলছে ঈর্ষপরায়ণদের ভাষায় "পিঠ চুলকানি"। চার বছরে দর্শকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে এনটিভি। গুণগত মান চমৎকার। নাটকের মান আরও ভাল। ছবির কোয়ালিটিও ভাল। ভাল জিনিসের কদর আছে। পাবলিক এনটিভির জন্ম বৃত্তান্ত জানতে চায় না। তারা ভাল অনুষ্ঠান দেখতে চায়। টাকা খরচ করেছে এনটিভি। বিএনপি সরকারের হিরো ফালু মিয়ার সন্তান এনটিভি। পয়সা খরচ করে ভাল যন্ত্রপাতি, কারিগর জোগাড় করেছে। পাবলিককে মুগ্ধ ও সম্মোহিত করে রাখার জন্য ভাল বায়োস্কোপের চাহিদা সবসময়ই বেশী। গুঁড়ের লোভে সব পিপড়া, মাছি, আর প্রজাপতিরা লাইন ধরে আগায়। এতে দোষের কিছু নেই। টাকার জাত নেই। যার হাতে থাকে সেই শাহেনশাহ। টাকার গন্ধে এনটিভিতে সবাই ভীঁড় জমায়। অনুষ্ঠানের চমক বাড়ে। বাহবা বাড়ে। দর্শক কাড়ে।

গতকাল ছিল জন্মদিন। জমকালো উৎসব চলছে। দেখলাম, জন্মদিনে কিভাবে সবাই লাইন ধরে এনটিভির বন্দনা গাইছে। পাবলিকের দোষ কি? কারণ, আমরা পাবলিক চিরকালই ভিক্টিম। আমরা দেখি। দেখেই আনন্দ পাই। যা পাই, তাতেই সন্তুষ্ট থাকি। কাচ্চি বিরিয়ানী প্লেটে আসলে আমরা কি জিগ্যেস করি, বিরিয়ানীর মাংস কি জিন্দা ছাগলের না মরা ছাগলের ছিল? দরকার নেই। কারণ, ধরেই নেই মেজবান দেখে শুনে ভাল ম্যাৎকার করা স্বাস্থ্যবান ছাগলের মাংসই পরিবেশন করছে। এনটিভির জন্মদিনে সেই একই কথা মনে পড়ল। আমরা পাবলিক, এনটিভি পেয়েছি। আমরা পরিবেশিত বিরিয়ানীতে ছাগলের মাংসের খবর নিতে যাই না। এনটিভির জন্ম ফালুর অবৈধ টাকার পাহাড়ে। ফালু জেলে। এনটিভি তো বায়োস্কোপ। এনটিভিকে জেলে নেওয়া যায় না। বায়োস্কোপ হাত ঘুরে। কারণ, বায়োস্কোপের দরকার আছে।

সামরিক বাহিনীর বন্দনামূলক প্রামাণ্য অনুষ্ঠানগুলো এনটিভি ঘটা করে প্রচার করে। দেশ ও জাতির বিবেক হবার চেস্টা করে। এনটিভির এমডি'র হামার সরকার নিয়ে গেছে। এনটিভিকে নেওয়ার দরকার নেই। ভবিষ্যতে দরকার। সুশীল, কুশীল, চোর, চামার সবাইকে একত্রিত করতে পেরেছে এনটিভি। টাকার গন্ধে অনেকেই অনেক কিছুর পেছনে থাকে। চুরির টাকা জনগণের টাকা। এনটিভি সহ সকল টিভি চ্যানেলের আর্থিক লেনদেন, অর্থের উৎস ও জোগানদাতার বিবরণ কেউ পাবলিশ করে না। সবাই গুঁড়ের সন্দেশের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। অবৈধ টাকা, মানুষ, প্রতিষ্ঠান কিভাবে স্বাভাবিক, সুস্থ ও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানে উত্তরিত হয় তার চমৎকার কেসস্টাডী এনটিভি। দুর্নীতির টাকা, চুরির টাকা যদি জনগণের হয়, দুদক যদি স্বচ্ছ হয়, তাহলে এনটিভি সহ সকল মিডিয়ার পোস্টমর্টেম করার দরকার। এনটিভির জন্মদিনে এর কুশীলবদের অভিনন্দন। কিন্তু জন্মদিনে তার জন্মবৃত্তান্ত মনে করিয়ে দেওয়ার খুব দরকার।