Wednesday, August 22, 2007

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিবিসির আপডেট


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্ফোরন্মুখ ঘটনায় সেনা বাহিনী পিছু হটেছে। ক্যাম্পাস থেকে সেনা বাহিনী তাদের ছাউনি গুটিয়ে নিয়েছে আজ ভোর পাঁচটার মধ্যে। ছাত্রদের উপর সেনা বাহিনী ও পুলিশের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে ছাত্র জনতা। বিবিসি বাংলা এব্যাপারে চমতকার নিউজ কাভারেজ ও বিশ্লেষণ দিয়েছে। ছাত্রদের সাথে যোগ দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করার আহবান জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। রাজনৈতিক অধিকার ও দ্রুত নির্বাচনের দাবী জানানো হয়েছে। জেগে উঠুক ছাত্র জনতা। আবারও উড়ুক গণতন্ত্রের বিজয় কেতন। নির্বাসিত হোক সামরিক কর্তৃত্ব ও স্বৈরাচার। তাহলে আজ সকালে প্রচারিত প্রায় ১৫ মিনিটের বিবিসির নিউজ কাভারেজ শুনুন এখানে:

Get this widget Share Track details

Friday, August 17, 2007

তুমি রবে সংগ্রামে

ভিডিওটি এনওয়াই বাংলার সৌজন্যে:

বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে আমার দেখা সেরা অনলাইন ভিডিও। জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করল ঘাতকরা। এখনও তারা তাদের প্রাপ্য শাস্তি পায়নি। ঘাতকরা বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃত হয়েছে। বিচারের বাণী আর কতোকাল নীরবে নিভৃতে কাঁদবে? দেখুন তাহলে ভিডিওটি:





Print Page

Monday, August 06, 2007

রাস্ট্রপতি, আর্মী আর বন্যা:

(একই সাথে দেশীভয়েসে প্রকাশিত)
দেশে চলছে ভয়াবহ বন্যা। দেশের এই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে গতকাল রাস্ট্রপতি সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে হাজির হয়ে জেনারেলদেরকে গণতন্ত্রের প্রহরী হিসেবে প্রত্যয়ন দেওয়ার কারণ কি? এই মূহুর্ত্তে সেনাবাহিনীর দায়বদ্ধতাকে স্মরণ করিয়ে তাদের প্রশস্তি দেওয়ার কোন যুক্তি নেই। রাস্ট্রপতি বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা না বলে সশস্ত্র বাহিনীর ১১ই জানুয়ারীর অবদানকে দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন। সেনাবাহিনীর অবদান নিয়ে কারো মধ্যে প্রশ্ন নেই, তবে হঠাৎ করে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে হেডলাইন করার যৌক্তিকতা বেশ অবান্তর মনে হলো। পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও দূর্দশাগ্রস্থ লোকদের দুর্ভোগের চিত্র আবারও স্মরণ করিয়ে দিল, সরকারী পদক্ষেপের অপ্রতুলতা। বানভাসি লোকগুলো সাহায্য পাচ্ছে না আর বন্যার বিষয় বাদ দিয়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে রাস্ট্রপতির প্রশস্তি পর্যবেক্ষকদের মনে বেশ অযাচিত ঔৎসুক্যের উদ্রেক ঘটাবে। তাহলে গতকালের টিভি সংবাদ থেকে নেওয়া অংশটুকুতেই দেখুন "রাস্ট্রপতি, আর্মী আর বন্যা":

Sunday, August 05, 2007

মামা, পাবলিক ঘুমায় কেন?


যারা আমার ভাগ্নেকে চেনেন না, তাদেরকে বলছি আমার সবে ধন নীল মনি ভাগ্নে আমার বাসার সবচেয়ে সচল মানুষ। কথার খই তার মুখে ফুটবে দিন রাত। মাঝে মাঝে ভাবি, রাতে কি সে ঘুমায়? ঘুমেও বোধ হয় কথা বলে। ছুটির দিনে সকাল সকাল ঘূম থেকে তুলে দিয়ে তার দিনের যাত্রা শুরু করলো। রুমে হুটহাট করে ঢুকেই বলে উঠল, পাবলিক এতো ঘুমায় কেন? আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম, "এই বেকুব বাজে তো সকাল সাতটা। ছুটির দিন একটু ঘুমাই"। এই বার বলে উঠল, "না মামা, তোমাকে বলছি না। তুমি তো ২৪ ঘন্টাই জেগে থাক, বলছি পাবলিককে"। পাবলিক নিয়ে তার অতি উৎসাহ দেখে বললাম, "পাবলিক কি করবে? এমনিতেই ঝড় ঝঞ্চা চলছে, যতো ঘুমায় ততই ভাল"। না, মামা। তুমি কিছুই বুঝ না, ভাগ্নের বোদ্ধা উত্তর। গতকাল গেলাম র‌্যাংগস ভবন ভাংগা দেখতে। পাবলিকের ভীঁড় নেই। বন্যা আসল। লোকজন ত্রাণ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবে, তারও কোন খবর নেই। পাড়ায় পাড়ায় চান্দা নিবে, না কোন আওয়াজ নেই। এমনকি স্বয়ং সেনাবাহিনী একদিনের বেতন নিয়ে হাজির হলো, তাতেও দেখি পাবলিকের ঘুম ভাংগে না"।

এবার একটু নড়চড়ে উঠে বিছানায় বসলাম। ভাগ্নে আমার স্মার্ট। হাতে এক কাপ চা। আহা, তাজা এক কাপ চা। বেড টি। এরকম ভাগ্নে যার আছে তার যে কি সৌভাগ্য। শুধু হাতের কাছে ডাক্ট টেপ রাখার দরকার। যখন বেশী কথা উতরায়, তখন খালি মুখে মেরে দিলেই হবে। হাতে চা নিয়ে চুমুক দিয়ে ভাগ্নের সহাস্য বদনের দিকে তাকালাম। ভাগ্নে জানে, মামাকে কি দিয়ে কাইত করা যায়। মনে মনে বলি, অনেক বড়ো হও মামা। এবার আমি ভাগ্নের দিকে তাকিয়ে বললাম, মামা র‌্যাংগস ভবন তড়িঘড়ি করে ভেংগে কড়িৎকর্মা সরকার দেখাল, "তারা পারে"। র‌্যাংগস ভবন ২৪ ঘন্টার কম সময়ে ভেংগে তার প্রমান করলো, বিলম্বেই বিপদ। এছাড়া মানুষের মন, কখন কোন দিকে যায়? ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি আবার ম্যানেজ করে ২২ তলা দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে লজ্জা না? তাই, সরকার সেই চান্স নিতে চাইল না। এছাড়া, মানুষের জিনিস পত্র সরিয়ে নিতে আরেকটু সময় দিলে তো নাটক জমে না। হনুমানের বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। ২২ তলা পাহাড় মাথায় নিয়ে পাবলিকের মুখে হাসি ফুটাতে চাইল। কিন্তু তারপরও পাবলিক ঘুমায় কেন?

মামা, "বন্যার কি হবে"? ভাগ্নের উৎকন্ঠা। পাবলিক যদি ঘুমায় তা হলে কেমনে কি হবে? আরে বেকুব, পাবলিক কি করবে। পাবলিকরে নেতারা শিখিয়েছে, আল্লাহর জিনিস আল্লাহ নিবে। এটা নিয়ে বলার কি আছে? তাই, পাবলিক দেখছে, আল্লাহর রহমতের পানি দিয়েছে। পুরো দেশের আধেকটা রহমতে ভাসছে। বাকী অর্ধেকটা ছুই ছুই করছে। এসব উপরওয়ালার ইচ্ছা। উপরওয়ালা বলল, "হায়রে হনুমান, দেশ সেবা করবি। নে, বানের পানি দিলাম। এবার পাবলিকের সেবা কর"। আর পাবলিক বলে, এই দেশের জন্মের ৫ বছর থেকেই তো সেবা করে আসছে খাকীর দল। পরিণতি জানা। তাই, যা করার করো। বন্দুকের নল দিয়ে দেশ রক্ষা করা যায়, দেশ স্বাধীন করা যায়, শত্রুকে দমন করা যায়। কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। এই সহজ কথা কি আর হনুমানের দল বুঝে? তাই, পাবলিক এখন ঘুমায়।

ভাগ্নে আমার লেকচারে বিরক্ত। বলল, "মামা, তুমি কিছুই জান না। আমার কলেজের সুমনার দিকে তাকানোই যায় না"। র‌্যাংগস ভবন, বন্যা, তারপর সুমনা? কিছুই বুঝলাম না। সব তালগোল পাকিয়ে গেল? অবাক হয়ে বললাম, "সুমনার আবার কি হলো"? আহা, মামা বড়োই দু:খের কথা। সুমনা কলেজে নতুন নতুন মডেলের গাড়ী নিয়ে আসতো। কতো ফুটানি দেখাতো। এখন সুমনার বাসে করে আসারও জো নেই। সর্বস্ব খুইয়েছে দুদকের কাছে। বাবা ফেরারি। গাড়ী থানায়। চোখ থাকে ছলছল। খুব মায়া লাগে। আমি ভাগ্নের দিকে হাতজোড় করে বললম, "দয়া করে মায়া দেখিয়ে সুমনাকে আমার বাড়ীতে নিয়ে এসো না। শেষে দুদক আমার পেছনে লাগবে"। ভাগ্নের ধান্ধার হিসেব কি তা বুঝার চেস্টা করলাম।

সুমনার ব্যাপারটা নিয়ে নাড়াচাড়া না করে বললাম, "পাবলিকের টাকা কই? সব একাউন্ট ফ্রীজ করে রাখা হয়েছে"। তাই, পাবলিক টাকার থলি নিয়ে এখন আর ফখরু চাচার কাছে যাবে কিভাবে? রাজনৈতিক নেতারা আপন প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত। "সেই দিন কি আর আছে? দিন বদলাইছে না"- তাই পাবলিক কাঁথা বালিশ নিয়ে ঘুমায় আর বায়োস্কোপ দেখে। আর হনুমানের দল ভাবছে, "স্যার এভরিথিং আন্ডার কন্ট্রোল"। তবে বানভাসি লোকজন যখন আশ্রয়ের সন্ধানে শহরের দিকে ছুটবে তখন কি ক্যান্টনমেন্টে তাবু খাটাবার মতো জায়গা থাকবে তো?


Print Page

Wednesday, August 01, 2007

শেয়ালের খোঁয়ারে গণতন্ত্রের ইনকিউবেটর


লিবারেল আর্টস ব্যাকগ্রাউন্ডের ছাত্র হয়ে বিজ্ঞান নিয়ে নাড়াচাড়া করতে গিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা দেখে নিজেই লজ্জিত হয়ে পড়ি। তাই আমার মন বিজ্ঞানমনস্ক না হয়ে বিজ্ঞানভীত হয়ে উঠে। আশেপাশে বোদ্ধা মানুষের দল যখন জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলেন তখন তাদেরকে সমীহ করে চলি। শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে উঠে। ছোট বেলায় স্কুলে থাকতে একবার বিজ্ঞান ল্যাবে ট্যুর করার কথা হুট করে মনে পড়ল। চোখ আটকে থাকল ডিম তা দেওয়ার ইনকিউবেটরের দিকে। বড্ডো রহস্যময় মনে হলো। কি অবাক ব্যাপার!! মুরগীকে কতো কস্ট করে ডিমে তা দিতে হয়। ছোটবেলায় অপেক্ষায় থাকতাম কখন বাচ্চাগুলো ফুটবে। তারপর ফুটফুটে তুলতুলে বাচ্চাগুলো ডিমের খোসা থেকে বের হয়ে আমাদের হাতের তালুতে বড়ো হতে থাকতো। আমরা সবাই কতো না নাম দিতাম এই তুলতুলে বাচ্চাদেরকে। বড্ডো আদরের। তাই, ইনকিউবটর দেখে আমার সেই অল্পবয়সী মনে প্রশ্ন উঁকি দিলো, “আহারে এতোগুলো ছোট বাচ্চাকে কে যত্ন করবে”? এরা পাবে না মায়ের আদর। দু’দিকে ডানার মধ্যে তুলতুলে পশমে মাথা গুঁজে চোখ বন্ধ করে স্বস্তি পাবে না। ইনকিউবেটরের বদ্ধ হাওয়ায় জন্ম নিয়ে এদেরকে বড়ো করা হবে খাদকদের উদরপূর্তির জন্য। ইনকিউবেটরকে নৃশংস মনে হয়েছিল। হঠাৎ করে এতোদিন পর এই পড়তি বয়সে আবার ইনিকউবেটরের কথা মনে পড়ে গেল।

দেশীয় মুরগীর ডিমান্ড বড্ডো কম। ফার্মের মুরগীর যোগান বেশী। কারণ, এতে মুনাফা বেশী। তাই, পোলট্রি ফার্মের ব্যবসায়িক বুদ্ধিটি দেশের সামরিক সরকার রপ্ত করে নিতে বিলম্ব করেনি। ১৯৭৫ সাল থেকেই তো এদেশের সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রের বাচ্চা সেনাছাউনির ইনকিউবেটরে জন্ম দিয়েছে। তাতে নাদুশ নুদুশ ছানা বেরিয়েছে অনেক। তাদের সৎকার করে সেনাপ্রধান জিয়া আর এরশাদ গনতন্ত্রকে সংহত করেছেন। এখন ২০০৭। ইনকিউবেটর প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়েছে। যোগ দিয়েছে এটমিক ঘড়ি। তাতে সময়ের হিসেব হয় একেবারে নিঁখুত। তাই, এখন সহজেই বলা যায়, নতুন ছানার জন্ম হবে কবে? মেশিনে গরম তা দিয়ে রাখা হচ্ছে। দিনক্ষণ ঠিক করে নব ঘুরিয়ে তাপমাত্রা বাড়িয়ে কমিয়ে যথাসময়ে আবার এক দল নতুন ছানা ইনকিউবেটর থেকে বেরিয়ে দাঁত কেলিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। আমরা নিরীহ পাবলিক। জ্ঞান বিজ্ঞান বুঝি না। প্রযুক্তি বুঝি না। অংকের হিসেব বুঝি না। আমরা খোসা ভেংগে বেরিয়ে আসা ডিমের বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে চোখ গোল করে বলব, “খাসা হয়েছে”। দেশী বিদেশী এডভাইজাররা কোরাস গেয়ে বলবেন, “বাচ্চাগুলো সুস্থ। প্রবৃদ্ধির সমূহ সম্ভাবনা। মুক্তি এবার হবে। স্বয়ম্ভরতা আসবে”। দিকে দিকে মোসাহেবের দল চোঙ্গা মাইক দিয়ে প্রশস্তি গাইবে। তাদেরকেও সিস্টেমে নিয়ে আসা হয়েছে। পাবলিক কি জানে, শেয়ালের খোঁয়ারে গণতন্ত্রের ইনকিউবেটরে নতুন ছানাদের পরিণতি কি হবে? দু:খজনক হলেও সত্য, পাহারাদার শেয়ালের প্রশস্ত হাসিতে আমরা সবসময়ই উষ্ণতা ও আস্বস্তি খুঁজে বেড়াই!!!