২৫ ডিসেম্বর, ২০০৬
শ্রদ্ধেয় ....
ক’দিন আগে আপনার চিঠি পেলাম। খুব ভালো লাগল। আপনার চিঠি পড়ে মনে হলো আপনি একেবারে মুখোমুখি কথা বলছেন। এতো বছরে আপনার এতোটুকু পরিবর্তন হলো না। সেই আগের মতো আড্ডা। কঠিন কথাগুলো সহজভাবে বলার অদ্ভুত ক্ষমতা। খুব মিস করি সেদিনের আড্ডাগুলো। সময় যে এতো দ্রুত পার হয়ে যায়, তা আপনার চিঠি না পড়লে মনেই হতো না। বড্ডো নস্টালজিয়ায় ভুগি। সবই নিয়তি। জীবনের প্রয়োজনে আজ এতোদূরে আমাদের অবস্থান। চাইলেও দেখা হওয়া সম্ভব না। আমাদের দু’জনকে দুদিক ছুটতে হলো। তারপরেও আপনার চিঠি পড়লে মনে হয়, এই তো আমরা এখনও আছি কাছাকাছি। সময় আর দুরত্বের সকল ব্যবধানকে ফাকি দিয়ে। আজকাল তো কেউ চিঠি লেখে না। সময় কোথায়? ধৈর্য কোথায়? তাই আপনার চিঠি পেয়ে মনে হলো, না এখনও কিছু মানুষ আছে যারা চিঠির পাতায় স্মৃতির কথা, ভালো লাগা আর খারাপ লাগার কথা তুলে ধরতে আনন্দ পান।
আমার কথা? নতুন কোন খবর নেই। অফিসে যাওয়া বিকেলে বাড়ীতে ফেরা আর বাগানের পরিচর্চা করা নিয়মিত কাজ। সেই বাগানটা যেখান রক্তজবা আর আপনার প্রিয় গোলাপ ছিল তা এখনও আছে। শীতের শিশির ভেজা সকালে আর গোধুলি লগ্নে এখনো তারা প্রস্ফুটিত হয়ে খাকে অনাগত ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। আপনাকে আগেও বলছি আর এখন আরেকবার বলছি হতাশা আমার নয়। কস্টের মুহুত্তে আর আনন্দের সময় এখনো বলতে মনে চায় আমি চিরকালই আশার আবাদ করি। হতাশায় আমার বসবাস নয়। আগের মতো রাগ করি কি না। না, আজকাল একেবারেই রাগ করি না। সবকিছুই নিয়তির হাতে জমা দিয়ে দিয়েছি। তাই চারদিক তাকিয়ে এখন আর কস্ট পাই না। প্রতিবাদী হই না। মিছিলে যাই না। বারবার ভাবি এমনই হওয়ার কথা বোধ হয় ছিল। এই জীবনের স্বপ্ন আর দেশের স্বপ্ন সবই হোচট খায় প্রতারিত বাস্তবতার কাছে। না হলে আমাদের স্বপ্নগুলো কেন দু:স্বপ্নে পরিণত হলো? অমাবস্যার রাত কি সকালের দেখা পাবে না?
আপনার বাসার সবাইকে শুভেচ্ছা দিবেন। সময় পেলে একসময় বেড়াতে আসব। কবে কথা দিতে পারছি না। সময় সুযোগ পেলে চলে আসুন আমাদের এদিকে। ভাল লাগবে কথা দিচ্ছি। ঘন্টার পর ঘন্টার আড্ডা হবে যতক্ষণ না বাসার ভেতর থেকে তাড়া আসে। বেশ কিছু ছবি পাঠালাম। আশা করি ভাল লাগবে। কথা হবে। নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা দিয়ে আজ তাহলে এখানেই বিদায় নিচ্ছি।
শুভেচ্ছান্তে,
আপনার ভক্ত ......
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment