Saturday, January 27, 2007

কন্ঠরোধ কেন?

(দেশীভয়েসে এক সাথে প্রকাশিত)
দেশে জরুরী আইন জারির দু'সপ্তাহ পরে হঠাত্‍ করে গণমাধ্যমের গলা চিপে ধরা হলো কেন তা আমরা অনেকেই জানি না৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার অনেক ভাল উদ্যোগ নিচ্ছেন এ নিয়ে জনমনে কোন সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না৷ লোক দেখানো উদ্দেশ্যে অথবা আগাগোড়া সংস্কারের দুরূহ ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে যদি সরকার কোমড় বেঁধে মাঠে নামে তাহলে বলবো উদ্দেশ্য পুরোটা সত্‍ না৷ রাজনৈতিক অথবা সামাজিক সংকট এমন কোন বিপর্যয়কর অবস্থায় নামেনি যে হঠাত্‍ করে গণমাধ্যমের উপর বিশাল খবরদারি ও নজরদারি জারি করতে হবে৷ জনগণ নীরব হলেও বোকা নয় এটা সরকারের বোঝার দরকার আছে৷

সামহোয়্যার ইন-এ আমরা যারা ব্লগাই সেখানেও বিধিনিষেধের হুমকি অত্যন্ত হাস্যকর৷ অনেকেই সামহোয়্যার ইন-এ তাদের কথা প্রকাশ না করে অন্য ইন্টারনেট মাধ্যম বেছে নেবে- তা বোঝার মতো বুদ্ধিমত্তা সরকারের নীতিনির্ধারকদের আছে কি-না তা আমি জানি না৷ চোখ বন্ধ করে আর কন্ঠরোধ করে সরকার যদি মুক্ত চেতনাকে ধ্বংস করতে চায় তাহলে তারা কেবল পূর্বসূরীদের পথই অনুসরণ করবে৷ দেশ দুর্নীতিমুক্ত হোক, সন্ত্রাস নিপাত যাক৷ এসব ব্যাপারে কোন আপত্তি কারও নেই৷ কিন্তু রেখে ঢেকে আর আড়ালে আবডালে যখন অপারেশন চলে তখন তা হারায় স্বচ্ছতা আর বৈধতা৷ সেখানে দুর্নীতির ফাঁক ফোকর থেকেই যায়৷ বিগত সরকারের আমলে র‌্যাবের মাধ্যমে যে রাস্ট্রীয় সন্ত্রাস চলেছে তা যদি আরও ব্যাপকতর আকার ধারণ করে তখন সরকার তার আচরণের নৈতিক ভিত্তি হারাবে৷

গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের উপর নিয়ন্ত্রন চাপিয়ে আমাদের স্বাধীন চিন্তা ভাবনাকে অবরুদ্ধ করা যাবে না৷ এধরনের আচরণ বিগত সামরিক জান্তার নির্যাতনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ আশা করি, সরকার তাদের এই জরুরী বিধি নিষেধ সাময়িক ও স্বল্পকালীন সময়ের জন্য বলবত্‍ রাখবেন৷ এর পটভূমিও জনগণের জানার অধিকার আছে৷ সুস্থ নির্বাচনের জন্য স্বাধীন মতামত ও ভাবনা প্রকাশের সুযোগকে সংকুচিত না করে তা অবারিত করে দেওয়ার দরকার৷ তাই, সরকারের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই আমি নিজে৷ আপনাদেরকেও এই প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার আহবান জানাই৷ আশা করি, জনগণ অবিলম্বে তাদের স্বাধীন ভাবনা প্রকাশের সুযোগ পাক৷ কারণ, জনগণের কন্ঠরোধ করা স্বৈরাচারী আচরণের প্রতীক৷ আর স্বৈরাচারের ধ্বনি শুনলে নুর হোসেনরা যে আবারও জেগে উঠবে৷

2 comments:

chor said...

ভালো লিখেছেন। আমাদের নীতিনির্ধারকরা ধরে আনতে বললে বেঁধে আনেন টাইপ কাজ করেন। জনগণ কাউকেই বিশ্বাস করে না। দীর্ঘদিনের অসততার চর্চার শিকার জনগণ জোর করেও কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না।

-চোর

Addabaj said...

ধন্যবাদ চোর আপনার মন্তবে্যর জন্য। পড়ুন আর লিখুন।