একমাত্র জামাতীদের পক্ষেই সম্ভব দুই নাম্বারী খবরকে হেডলাইন দেওয়া। গতকাল দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতার খবর দেখে আমার চক্ষু চড়ক গাছ। ব্লগে যেমন অনেকের লেখায় আমি বিনোদন পাই, পত্রিকা হিসেবে দৈনিক সংগ্রাম নজর কাড়ে তাদের বিনোদনমূলক উপকরণের জন্য। তবে গতকালকের খবরটা নিয়ে লিখতে গিয়ে আরেকটু গবেষণা করতে শুরু করলাম। কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে এলো।
জামাতীইসলামীবাংলাদেশ নামে গুগলমেইল দিয়ে শামীম চৌধুরী নামে একজন গ্রুপে ইমেইল পোস্ট করে শেখ হাসিনার ঢাকায় প্রত্যাবর্তনে জনতার মিছিলের খবর দিয়েছেন। এতে রাজনৈতিকভাবে হেয় হয়েছে জামাতীরা। এখন তার এই প্রচারণার কারণে জামাতে ইসলামীকে তত্বাবধায়ক সরকার নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। কি সর্বনাশ!!! যেহেতু ই-মেইলটি ইয়াহু গ্রুপে ছাড়া হয়েছে জামাতে ইসলামী ইমেইল আইডি দিয়ে। শামীম চৌধুরী কে আমি জানি না। তবে খবরটি বেশ চমকপ্রদ মনে হওয়াতে শুরু করলাম খোঁজখবর নেওয়া। ইয়াহু গ্রুপে গিয়ে দেখলাম শামীম চৌধুরীর ই-মেইল আছে তার নিজের নামে। তার লেখার সাথে সম্পর্ক নেই কোন জামাতীইসলামীবাংলাদেশ গুগলমেইল আইডির। ইয়াহু গ্রুপে ই-মেইল ছাড়লে তাতে মূল লেখকের নাম পাশেই আসে। আর কপি পেস্ট করে অন্যখান থেকে জোড়াতালি লাগালে সেটা চলে যায় মাঝখানে। হায়রে, জামাতী নির্বোধরা। চুরি যদি করতে হয়, আরেকটু বুদ্ধি খাটিয়েই করো। ইয়াহু গ্রুপটা ছেঁকে দেখলেই বুঝা যায় মৌলবাদী জামাতীদের ধান্ধা। নিজেরাই এরা নিজেদের খবর তৈরী করে। সেনশেসন তৈরী করে। নতুন কিছু না।
খবরটা দেখে একটু মজা পেলাম। ব্যাপারটা মনে করিয়ে দেয় জামাতীদের নোংরা কৌশলের কথা। শিরোনাম তৈরী করতে এদের ইয়াহু গ্রুপের স্বরচিত ই-মেইল লাগে। নিজেরা কপি পেস্ট করে ছেড়ে দিল। আর দৈনিক সংগ্রামের পাঠকরাও তা সাথে সাথে গলাধ:করণ করল। কিন্তু ব্যাপারটা বেশ মজার যে গুগল মেইল আইডি কয়েক বছর আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জিমেইল আসার পরপরই। মার্কিন মুল্লুকে নাকি গুগলমেইল দেওয়াই হয় না বলে ব্লগের আরেক কম্পু বিশেষজ্ঞ ই-মেইল করে জানালেন। খবরটা শুনে আমারও আক্কেলগুড়ুম। অন্যদিক জামাতীদের ইয়াহু গ্রুপগুলো গত ক'দিন থেকে শামীম চৌধুরীকে শিরোনাম বানিয়ে ইয়াহু গ্রুপ কাঁপিয়ে ভোদরের মতো নাচছে। এখন এই বানেয়াট ই-মেইলের কারণে যদি সরকার জামাতে ইসলামকে বন্ধ করে দেয় তাহলে ইসলামী আন্দোলনের কাফেলা কোথায় গিয়ে ঠাঁই নেবে? হঠাত জামাতে ইসলাম দেখি আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করতে চায়। তাতে ইয়াহু গ্রুপ থেকে যদি একজন শামীম সাহেবকে পাওয়া যায়, তাহলে মন্দ কি?
সাংবাদিক বন্ধুদেরকে খোঁজ নিতে বললাম। সকাল নাগাদ ই-মেইলের মাধ্যমে জানলাম, শামীম চৌধুরী নামে একজন মার্কিন মুল্লুকে আছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগের কোন কর্তাব্যক্তি নন। গত বছরই তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাহী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এখন তার নাম ভাংগিয়ে যদি জামাতের মাঠ গরম করা যায়। জেহাদী জোশ বিতরণের জন্য দরকার কিছু নাম। কিছু উড়ো খবর। কাট-পেস্ট করে খবর দিয়ে কর্মী-সাথীদের জেহাদী জোশকে চাঙ্গা করা। হায়রে নোংরা কৌশল!!! ইসলামী আন্দোলন বেচে যাদের জীবন চলে তাদের জন্যই এধরনের উড়ো খবরকে পত্রিকার শিরোনাম বানানো সম্ভব।
আওয়ামী লীগ আর বিএনপি রাজনীতির সাথে জামাতীদের চারিত্রিক ব্যবধান হচ্ছে তারা সবসময়ই কৌশলগতভাবে তাদের অবস্থানকে সংহত করে। এজন্য জামাতীদের কৃতিত্ব কখনো খাটো করা যায় না। ধর্ম দিয়ে, আবেগ দিয়ে, কৌশল দিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে তারা রাজনৈতিক শক্তি সংহত ও বিস্তৃত করে। ইয়াহু গ্রুপগুলোতে টোকা দিলেই বুঝা যায় তাদের শেকড়ের বিস্তৃতি। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিরা অনেক পিছিয়ে আছে। জামাতীরা সফলভাবে তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে ডাহুক ইয়াহু গ্রুপ আর সোনার বাংলাদেশ ইয়াহু গ্রুপ দিয়ে। একাততরের চেতনাকে যদি সংহত করতে হয় আর জামাতী রাজাকারদের প্রতিহত করতে হয়, তাহলে এসব ইন্টারনেট গ্রুপগুলোর মৌলবাদী প্রচারণার প্রতি চোখ রাখার খুব দরকার। না হলে এরা কপি পেস্টের আশীর্বাদে নতুন জেহাদী জোশ নির্বোধদের জন্য বিতরণ করে যাবে।
Thursday, May 17, 2007
Wednesday, May 16, 2007
এবার জামাতী রাজাকাররা কি বলবেন?
(বাংলা আড্ডায় পড়ে দেখুন পাঠকদের প্রতিক্রিয়াসহ)
খবরটা নজর কাড়ল। পাকিস্তানের দ্য নিউজ পত্রিকার আজকের খবর। পড়ে একটু চমকে উঠলাম। এতে পলিটিক্যাল স্ট্যান্টবাজি আছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও পাকিস্তান যদি বিষয়টা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে তাহলে এদেশীয় যুদ্ধাপরাধী রাজাকার জামাতীরা কি বলবে? যারা কখনও ভুলেও স্বীকার করে না তাদের একাততরের গণবিরোধী ভূমিকার কথা। গণহত্যার সাথে জড়িত রাজাকার জামাতীরা যুদ্ধাপরাধী। তাদের কোন ক্ষমা নেই। কিন্তু তাদের পাকিস্তানী দোসররা যদি ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে স্বীকার করে নেয় যে, তারা একাততরের গণহত্যার জন্য অপরাধী এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, তাহলে কি এদেশীয় রাজাকার জামাতীরা কি তাদের ভুল স্বীকার করবে? চাইবে ক্ষমা তিরিশ লাখ শহীদের কাছে? স্বপ্ন দেখতে পারেন। অসুবিধে নেই। তবে আপাতত পড়ে দেখুন, পাকিস্তানের সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর মুশাহিদ হুসেইন সাঈদ কি বলেছেন।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান গণমাধ্যম সম্মেলনে পাকিস্তানী সিনেটর দাবী জানান ১৯৭১-এর গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কথা। আজকের দ্য নিউজ পত্রিকার খবরে বলা হয়, সিনেটর মুশাহিদ বলেন, "There is nothing to hide on what happened in 1971. What Pakistan did against Bangalis in 1971 can be well dubbed as a crime instead of mistakes. The world is changing over. Japan apologised to China. Pakistan should also come up with an apology" ১৯৭১ সাল নিয়ে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে এতোটা স্পস্ট বক্তব্য আগে কখনও আসেনি।
পাকিস্তানীরা ভুল স্বীকার করুক আর ক্ষমা প্রার্থনা করুক, তাতে ইতিহাস বদলাবে না। কিন্তু পাকিস্তানীদের দোসর রাজাকার জামাতীরা কখনও বলবে না, তারা ভুল করেছে। অন্যায় করেছে। বরং তারা এখনও উদ্ধত। এখনও নির্বিকার থাকবে। বিকৃত ইতিহাস শেখাবে নব্য রাজাকারদের। এ নিয়ে আড্ডায় আগেও লিখেছি শিবিরের চোখে স্বাধীনতার ইতিহাস। তাই চলুন আজকে সেসব জামাতী রাজাকার ও ঘাতকদের মুখোশ খুলে দেই।
খবরটা নজর কাড়ল। পাকিস্তানের দ্য নিউজ পত্রিকার আজকের খবর। পড়ে একটু চমকে উঠলাম। এতে পলিটিক্যাল স্ট্যান্টবাজি আছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও পাকিস্তান যদি বিষয়টা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে তাহলে এদেশীয় যুদ্ধাপরাধী রাজাকার জামাতীরা কি বলবে? যারা কখনও ভুলেও স্বীকার করে না তাদের একাততরের গণবিরোধী ভূমিকার কথা। গণহত্যার সাথে জড়িত রাজাকার জামাতীরা যুদ্ধাপরাধী। তাদের কোন ক্ষমা নেই। কিন্তু তাদের পাকিস্তানী দোসররা যদি ভূ-রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে স্বীকার করে নেয় যে, তারা একাততরের গণহত্যার জন্য অপরাধী এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী, তাহলে কি এদেশীয় রাজাকার জামাতীরা কি তাদের ভুল স্বীকার করবে? চাইবে ক্ষমা তিরিশ লাখ শহীদের কাছে? স্বপ্ন দেখতে পারেন। অসুবিধে নেই। তবে আপাতত পড়ে দেখুন, পাকিস্তানের সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর মুশাহিদ হুসেইন সাঈদ কি বলেছেন।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান গণমাধ্যম সম্মেলনে পাকিস্তানী সিনেটর দাবী জানান ১৯৭১-এর গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কথা। আজকের দ্য নিউজ পত্রিকার খবরে বলা হয়, সিনেটর মুশাহিদ বলেন, "There is nothing to hide on what happened in 1971. What Pakistan did against Bangalis in 1971 can be well dubbed as a crime instead of mistakes. The world is changing over. Japan apologised to China. Pakistan should also come up with an apology" ১৯৭১ সাল নিয়ে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে এতোটা স্পস্ট বক্তব্য আগে কখনও আসেনি।
পাকিস্তানীরা ভুল স্বীকার করুক আর ক্ষমা প্রার্থনা করুক, তাতে ইতিহাস বদলাবে না। কিন্তু পাকিস্তানীদের দোসর রাজাকার জামাতীরা কখনও বলবে না, তারা ভুল করেছে। অন্যায় করেছে। বরং তারা এখনও উদ্ধত। এখনও নির্বিকার থাকবে। বিকৃত ইতিহাস শেখাবে নব্য রাজাকারদের। এ নিয়ে আড্ডায় আগেও লিখেছি শিবিরের চোখে স্বাধীনতার ইতিহাস। তাই চলুন আজকে সেসব জামাতী রাজাকার ও ঘাতকদের মুখোশ খুলে দেই।
Sunday, May 13, 2007
একটি ডিনার পার্টি ও ক'জন সাংবাদিক:
ব্লগে লেখা চলছে বছর দু'য়েক ধরে। তার মধ্যে একজন পাঠকের সাথে যোগাযোগ প্রায় গত একজন বছর ধরে। নিয়মিত ই-মেইল চালাচালি। তারপর জানলাম, তিনি খবরের জগতের সাথে জড়িত। আমার অনেক বছরের সিনিয়র। আমি নিজে যদিও খবরের দুনিয়া কেউ না তবে খবরগুলো প্রবলভাবে আমাকে নাড়া দেয়। তাই নিয়ে আমার কীবোর্ড সচল হয়। মৌলবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, রাজাকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সমাজ-সংসার নিয়ে যেসব ভাবনা আমার মনকে নাড়া দেয় তা-ই আমি তুলে ধরি আমার আড্ডার পাতায়।
আমার এই পাঠক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ ভার্চুয়াল। তার লেখা আর এডভোকেসীর আমিও ভক্ত। খবর জানলে আর রসদ থাকলে তিনি পাঠিয়ে দেন। আমার লেখা নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানান। লেখার লিঙ্ক পাঠিয়ে দেন অন্য বন্ধুদের কাছে। চলতে থাকে আমাদের ই-মেইল চালাচালি। গতকাল শনিবার রাতে ছিল তার বাসায় আমার ডিনার পার্টির নিমন্ত্রণ। ব্লগার হিসেবে পরিচয়, সেই সূত্রেই নিমন্ত্রণ। ডিনারে মেন্যু ছিল অনেক। এখন তার ফিরিস্তি দিয়ে অন্যদের হিংসের শিকার হতে চাই না। তবে আমার প্রিয় কাবাব ছিল। ছিল খুব মজার লাউ সেমাই। খাবার পর্ব শেষ হলো।
আমি একমাত্র আমন্ত্রিত অতিথি। তাই চলল বিরামহীন আড্ডা। আসল তাসনিম খলিলের মুক্তি নিয়ে কথা। আসল সংবাদ জগতের কথা। আসল সাহস-ভীরুতা আর গা বাঁচিয়ে চলার কথা। পটভূমির কথা। এলিট, মজদুর, ড্রইংরুম ভিততিক লেখক আর বর্ণচোরাদের কথা। আমি ব্ক্তা ভাল না। কিন্তু শ্রোতা খুবই ভাল। শুনতে থাকি। কিছু বলি না। হাসি। সমমনাদের কথায় তাই হয়তো চায়ের কাপে ঝড় উঠে না। ক্লান্ত হই না।
মাঝে মাঝে ভাবি, বিধাতা আমাকে কেন শুধু দু'টি চোখ আর দু'টি কান দিলেন? আমার চোখ আর কানের বিস্তৃতি যদি বাংলাদেশের আয়তনকে ছেড়ে যেত তাহলে সমস্ত মানুষের দু:খ-কস্ট-যন্ত্রণা শুনে-দেখে আমার হৃদয়ে ধারণ করে নীলকন্ঠ হতাম। নীলকন্ঠ হয়ে উঠা হয় না। সমুদ্রের স্যালাইনিটি বাড়তে থাকে। আমার অক্ষমতা আমাকে পীড়া দেয়। ভর্তসনা শুনতে হয় অন্যদের। মনে হয়, চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে আছি। তেলে মাথায় সবাই তেল দেয়। আমিও তার বাইরে না। আর যারা গন্ধ খুঁজে তারা মিটমিট করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ, এই অক্ষমদের জটলায় আমিও বসে আছি। আমার শত্রু আমার অক্ষমতা, আমার একান্ত মানবিক সীমাবদ্ধতা।
সাংবাদিক তাসনিম মুক্তি পেয়েছেন। আহমেদ নুর পাননি। অপূর্ব শর্ম্মা পাননি। তারাও সাংবাদিক। তারা ঢাকা শহরের না। তারা ব্লগান না। তারা শিরোনাম হন না ব্লগে বা পত্রিকার পাতায়। তাসনিম খলিল শিরোনাম হয়েছেন সিএনএন, ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, বিবিসি আরও অনেক পত্রিকা আর ব্লগের পাতায়। অন্য সাংবাদিকরা চোখের আড়ালে, তাই তারা কি আমাদের মনের আড়ালে? দোষ দেওয়া সহজ। লেখা কঠিন। প্রোফাইল তৈরী করা কঠিন। তাই চলুন সচল হোক তাদেরকে নিয়ে সকল ব্লগারদের কীবোর্ড। তাদের প্রোফাইল তৈরী করে ছবি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলার তথ্যগুলো তুলে ধরুন। তাসনিম আমাদের জন্য একটা কাজ সহজ করে দিয়েছেন। যারা তাসনিমের ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছিলেন, সেইসব পশ্চিমা মাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা, সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক গিল্ড আর এলিট ব্লগাররা এখন নীরব থাকবেন কিভাবে?
আমি কথা দিচ্ছি আমার সাধ্যমতো তাদের প্রোফাইলগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে তুলে ধরার চেস্টা করবো। তার সাথে আশা করি পাব সতীর্থ ব্লগারদের। বাংলাদেশের বুকের উপর হিমালয় পর্বত বসে থাকতে পারে। কথা সত্য ও বাস্তব। কিন্তু হিমালয় পর্বতও হেলে পড়বে যখন সকল সচেতন জনতা ঠেলতে শুরু করবে। কথাটা আমার না। এটা ইতিহাসের দেয়াল লেখনী। অনেকের পড়তে একটু সময় লাগে এই যা!
আমার এই পাঠক সিনিয়র ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ ভার্চুয়াল। তার লেখা আর এডভোকেসীর আমিও ভক্ত। খবর জানলে আর রসদ থাকলে তিনি পাঠিয়ে দেন। আমার লেখা নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানান। লেখার লিঙ্ক পাঠিয়ে দেন অন্য বন্ধুদের কাছে। চলতে থাকে আমাদের ই-মেইল চালাচালি। গতকাল শনিবার রাতে ছিল তার বাসায় আমার ডিনার পার্টির নিমন্ত্রণ। ব্লগার হিসেবে পরিচয়, সেই সূত্রেই নিমন্ত্রণ। ডিনারে মেন্যু ছিল অনেক। এখন তার ফিরিস্তি দিয়ে অন্যদের হিংসের শিকার হতে চাই না। তবে আমার প্রিয় কাবাব ছিল। ছিল খুব মজার লাউ সেমাই। খাবার পর্ব শেষ হলো।
আমি একমাত্র আমন্ত্রিত অতিথি। তাই চলল বিরামহীন আড্ডা। আসল তাসনিম খলিলের মুক্তি নিয়ে কথা। আসল সংবাদ জগতের কথা। আসল সাহস-ভীরুতা আর গা বাঁচিয়ে চলার কথা। পটভূমির কথা। এলিট, মজদুর, ড্রইংরুম ভিততিক লেখক আর বর্ণচোরাদের কথা। আমি ব্ক্তা ভাল না। কিন্তু শ্রোতা খুবই ভাল। শুনতে থাকি। কিছু বলি না। হাসি। সমমনাদের কথায় তাই হয়তো চায়ের কাপে ঝড় উঠে না। ক্লান্ত হই না।
মাঝে মাঝে ভাবি, বিধাতা আমাকে কেন শুধু দু'টি চোখ আর দু'টি কান দিলেন? আমার চোখ আর কানের বিস্তৃতি যদি বাংলাদেশের আয়তনকে ছেড়ে যেত তাহলে সমস্ত মানুষের দু:খ-কস্ট-যন্ত্রণা শুনে-দেখে আমার হৃদয়ে ধারণ করে নীলকন্ঠ হতাম। নীলকন্ঠ হয়ে উঠা হয় না। সমুদ্রের স্যালাইনিটি বাড়তে থাকে। আমার অক্ষমতা আমাকে পীড়া দেয়। ভর্তসনা শুনতে হয় অন্যদের। মনে হয়, চোখ থাকতে অন্ধ হয়ে আছি। তেলে মাথায় সবাই তেল দেয়। আমিও তার বাইরে না। আর যারা গন্ধ খুঁজে তারা মিটমিট করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। কারণ, এই অক্ষমদের জটলায় আমিও বসে আছি। আমার শত্রু আমার অক্ষমতা, আমার একান্ত মানবিক সীমাবদ্ধতা।
সাংবাদিক তাসনিম মুক্তি পেয়েছেন। আহমেদ নুর পাননি। অপূর্ব শর্ম্মা পাননি। তারাও সাংবাদিক। তারা ঢাকা শহরের না। তারা ব্লগান না। তারা শিরোনাম হন না ব্লগে বা পত্রিকার পাতায়। তাসনিম খলিল শিরোনাম হয়েছেন সিএনএন, ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন, বিবিসি আরও অনেক পত্রিকা আর ব্লগের পাতায়। অন্য সাংবাদিকরা চোখের আড়ালে, তাই তারা কি আমাদের মনের আড়ালে? দোষ দেওয়া সহজ। লেখা কঠিন। প্রোফাইল তৈরী করা কঠিন। তাই চলুন সচল হোক তাদেরকে নিয়ে সকল ব্লগারদের কীবোর্ড। তাদের প্রোফাইল তৈরী করে ছবি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলার তথ্যগুলো তুলে ধরুন। তাসনিম আমাদের জন্য একটা কাজ সহজ করে দিয়েছেন। যারা তাসনিমের ব্যাপারে সোচ্চার হয়েছিলেন, সেইসব পশ্চিমা মাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা, সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক গিল্ড আর এলিট ব্লগাররা এখন নীরব থাকবেন কিভাবে?
আমি কথা দিচ্ছি আমার সাধ্যমতো তাদের প্রোফাইলগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে তুলে ধরার চেস্টা করবো। তার সাথে আশা করি পাব সতীর্থ ব্লগারদের। বাংলাদেশের বুকের উপর হিমালয় পর্বত বসে থাকতে পারে। কথা সত্য ও বাস্তব। কিন্তু হিমালয় পর্বতও হেলে পড়বে যখন সকল সচেতন জনতা ঠেলতে শুরু করবে। কথাটা আমার না। এটা ইতিহাসের দেয়াল লেখনী। অনেকের পড়তে একটু সময় লাগে এই যা!
Friday, May 11, 2007
Blogger Tasneem Khaleel Arrested by the Army
(Cross posted at Deshivoice and Bangla Adda)
As a blogger, I'm concerned about Army's action to arrest Tasneem Khaleel. Please read this breaking news from Salam Dhaka, "Army has picked up a freind, blogger, and human rights activist Tasneem Khalil. We're not going to let this go unanswered.Tasneem's blog is http://www.tasneemkhalil.com/Tasneem is CNN and Human Rights Watch representative in Dhaka. He also works for Daily Star.The U.S State department, CNN, HRW are being contacted through the highest levels".
Bangla Bloggers have already started their protest against this action. Rezwan has just published this breaking news in Bangla Blog. Please join me along with thousands of bloggers to condemn this cowardly action by the Military.
Monday, May 07, 2007
সরকার কি ভেবে দেখবেন?
(একই সাথে আড্ডার পাতায় প্রকাশিত)
তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আমরা তাকিয়ে আছি দ্রুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যাবতর্নের প্রত্যাশায়। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার দাবী ছিল সাম্প্রতিককালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এখন সেই স্বচ্ছতা যদি আবারও বিলুপ্ত হয় তাহলে দেশের জনগণ আরেকটি সুযোগ হারাবে। আজকের খবরের কাগজে চোখ বুলাতেই নজরে পড়ল, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা গোপন আদালতে পরিচালিত হবে। খবরটা পড়ে ভাবতে লাগলাম লুকোচুরি খেলা কিন্তু কখনও স্বচ্ছ হয় না। বরং আড়ালে থাকলেই সন্দেহ আর প্রশ্ন সবার মনকে নাড়া দিবে।
আজকের ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে পড়লাম, "ভিআইপি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা বিচারের জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিচারকাজ পর্যবেক্ষণের জন্য সংবাদ মাধ্যমগুলোকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল রোববার বিশেষ আদালতে বিচারকাজ শুরুর প্রথম দিনে সাংবাদিকদের আদালত কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সাংবাদিকদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই বলে জানায়। কিন্তু কোন কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং কী হিসেবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্তব্যরত পুলিশ কিছুই জানাতে পারেনি। তাদের কথা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের প্রবেশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তারা শুধু ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের আদেশ পালন করছেন"।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা কেন? মামলা যদি নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তখন সেখানে ভয় বা আশঙ্কার কোন কারণ দেখি না। বরং সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়ার সুযোগ তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে কাজ করবে। স্বচ্ছ্তার কোন বিকল্প নেই। বিকল্প নেই জনপ্রিয় জনসমর্থনের। সরকার কি ভেবে দেখবেন?
তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে আমরা তাকিয়ে আছি দ্রুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যাবতর্নের প্রত্যাশায়। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার দাবী ছিল সাম্প্রতিককালের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এখন সেই স্বচ্ছতা যদি আবারও বিলুপ্ত হয় তাহলে দেশের জনগণ আরেকটি সুযোগ হারাবে। আজকের খবরের কাগজে চোখ বুলাতেই নজরে পড়ল, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা গোপন আদালতে পরিচালিত হবে। খবরটা পড়ে ভাবতে লাগলাম লুকোচুরি খেলা কিন্তু কখনও স্বচ্ছ হয় না। বরং আড়ালে থাকলেই সন্দেহ আর প্রশ্ন সবার মনকে নাড়া দিবে।
আজকের ভোরের কাগজের প্রতিবেদনে পড়লাম, "ভিআইপি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা বিচারের জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের এমপি হোস্টেলে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিচারকাজ পর্যবেক্ষণের জন্য সংবাদ মাধ্যমগুলোকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল রোববার বিশেষ আদালতে বিচারকাজ শুরুর প্রথম দিনে সাংবাদিকদের আদালত কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সাংবাদিকদের ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই বলে জানায়। কিন্তু কোন কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এবং কী হিসেবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্তব্যরত পুলিশ কিছুই জানাতে পারেনি। তাদের কথা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের প্রবেশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তারা শুধু ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের আদেশ পালন করছেন"।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা কেন? মামলা যদি নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয়, তখন সেখানে ভয় বা আশঙ্কার কোন কারণ দেখি না। বরং সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণ করতে দেওয়ার সুযোগ তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে কাজ করবে। স্বচ্ছ্তার কোন বিকল্প নেই। বিকল্প নেই জনপ্রিয় জনসমর্থনের। সরকার কি ভেবে দেখবেন?
Sunday, May 06, 2007
জামাতের নেতা মুজাহিদ বচন
জামাতের নেতা আলী আহসান মুজাহিদের বচন শুনে টাস্কি খেলাম। গতকালই এটিএন বাংলার খবরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা নিয়ে তার সাক্ষাতকার দর্শকদের যথেস্ট বিনোদন দিতে পেরেছে। এমনিতেই আমাদের দেশে বিনোদনের জন্য টিভির খবর সর্বেসর্বা। তুলনাহীন। খবরের মধ্যে মাথামোটা (দু:খিত) মাথাভারীদের সাক্ষাতকার সবচেয়ে বেশী বিনোদনমূলক। তা তাদের ভাষা,কথা, ব্ক্তব্য আর উচ্চারণ সবকিছুর মিলিয়েই।
না, আমি জামাতীদের মাথা মুজাহিদ সাহেবের বক্তব্য নিয়ে কিছু বলব না। এমনিতেই উনাদের মন এখন খুব খারাপ। পরিবারের ভাই বেরাদর সব যখন জেলে বসে আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখে আর বাকীরা যাই যাই করছে তখন কি আর এই মরার সংসারে মন টিকে? বৈরাগী মনে শান্তি নেই। ইসলাম নিয়ে ব্যবসাপাতি আজকাল একটু লসে আছে। ক্ষমতার হাওয়াই মিঠাই চাখতে চাখতেই মিইয়ে গেছে। যুবরাজের হাত ধরে কি ক্যারিশমাই না তৈরী হয়েছিল। ইসলামী জেহাদ এগিয়ে যাচ্ছিল হালকা গোলাপী মিঠা শাড়ীর আচঁলের আশ্রয়ে। কিভাবে যে হোঁচট খেল স্বপ্নেও ভাবেনি? স্বপ্ন যে এতো দুষিত হতে পারে তা মুজাহিদের কথা এটিএন বাংলার খবরে নিজে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
শুক্রবারের খবরে দেখলাম, মুজাহিদের বিরুদ্ধে চান্দাবাজির মামলা হয়েছে। আমাদের সময় লিখছে, "সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ এবং জামায়াতের সাবেক সাংসদ মো. ফরিদ উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকাল সিলেটের ২ নং আমলী আদালতে কানাইঘাট থানার রাজেখেল গ্রামের মো. আবদুল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন"।
এটিএন বাংলার খবরে তার সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর তিনি এবং তাদের বিএনপি জামাত জোট সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ করেছেন আর এখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা আনা হয়েছে। এটা হয়রানিমূলক। তিনি প্রধান উপদেস্টার দৃস্টি আকর্ষণ করে তার কাছে ন্যায্য বিচার দাবী করেন। খুব কস্ট লাগল ভদ্রলোকের হয়রানি দেখে। এই মরার দেশে নামী মানুষরা ক্ষমতা হারালে নুড়ি দামও পায় না। হয়রানির শিকার হয়। কস্টে বুক ফাটে।
মাথামোটা মুজাহিদ অবশ্য চোখের মাথা খেয়েছেন। তার জেহাদী জাতীয়তাবাদী পরিবারের লোকজন দুর্নীতির কারণে জেলের ভাতে কাঁকড় বাছে, তখন তিনি আবার গর্বিতভাবে দাবী করেন দুর্নীতিমুক্ত সত লোকদের শাসনের পাঁচটি বছরের কথা। তামাশা করার একটা লিমিট থাকা উচিত। মুজাহিদ এই বয়সে স্বপ্ন বিভ্রমে আক্রান্ত হতে পারেন সমস্যা নেই। কিন্তু ত্রাণের শাড়ী আর টিন দিয়ে তৈরী স্বপ্ন প্রাসাদ যে ভেংগে পড়েছে সেই বোধ বোধ হয় এখনও তাকে স্পর্শ করেনি। মামলা হয়েছে কোর্টে। তিনি আবদার জানান ফখরুদ্দীন বরাবর। ঘটনা কি? খালি পেছনের দরজার ধান্ধা। কোর্টের মামলার মুখোমুখি হবেন কোর্টে। প্রধান উপদেস্টার কাছে আবদার কেন? জামাতীদের হঠাত করে জেলের জামাই আদরের প্রতি এতো অনীহা কেন? বড়োই নাফরমানী কথা। খোদার খেলের সাথে খোদ্দারির ধান্ধা!!!
না, আমি জামাতীদের মাথা মুজাহিদ সাহেবের বক্তব্য নিয়ে কিছু বলব না। এমনিতেই উনাদের মন এখন খুব খারাপ। পরিবারের ভাই বেরাদর সব যখন জেলে বসে আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখে আর বাকীরা যাই যাই করছে তখন কি আর এই মরার সংসারে মন টিকে? বৈরাগী মনে শান্তি নেই। ইসলাম নিয়ে ব্যবসাপাতি আজকাল একটু লসে আছে। ক্ষমতার হাওয়াই মিঠাই চাখতে চাখতেই মিইয়ে গেছে। যুবরাজের হাত ধরে কি ক্যারিশমাই না তৈরী হয়েছিল। ইসলামী জেহাদ এগিয়ে যাচ্ছিল হালকা গোলাপী মিঠা শাড়ীর আচঁলের আশ্রয়ে। কিভাবে যে হোঁচট খেল স্বপ্নেও ভাবেনি? স্বপ্ন যে এতো দুষিত হতে পারে তা মুজাহিদের কথা এটিএন বাংলার খবরে নিজে না দেখলে বিশ্বাস হতো না।
শুক্রবারের খবরে দেখলাম, মুজাহিদের বিরুদ্ধে চান্দাবাজির মামলা হয়েছে। আমাদের সময় লিখছে, "সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদ এবং জামায়াতের সাবেক সাংসদ মো. ফরিদ উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকাল সিলেটের ২ নং আমলী আদালতে কানাইঘাট থানার রাজেখেল গ্রামের মো. আবদুল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন"।
এটিএন বাংলার খবরে তার সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর তিনি এবং তাদের বিএনপি জামাত জোট সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ করেছেন আর এখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা আনা হয়েছে। এটা হয়রানিমূলক। তিনি প্রধান উপদেস্টার দৃস্টি আকর্ষণ করে তার কাছে ন্যায্য বিচার দাবী করেন। খুব কস্ট লাগল ভদ্রলোকের হয়রানি দেখে। এই মরার দেশে নামী মানুষরা ক্ষমতা হারালে নুড়ি দামও পায় না। হয়রানির শিকার হয়। কস্টে বুক ফাটে।
মাথামোটা মুজাহিদ অবশ্য চোখের মাথা খেয়েছেন। তার জেহাদী জাতীয়তাবাদী পরিবারের লোকজন দুর্নীতির কারণে জেলের ভাতে কাঁকড় বাছে, তখন তিনি আবার গর্বিতভাবে দাবী করেন দুর্নীতিমুক্ত সত লোকদের শাসনের পাঁচটি বছরের কথা। তামাশা করার একটা লিমিট থাকা উচিত। মুজাহিদ এই বয়সে স্বপ্ন বিভ্রমে আক্রান্ত হতে পারেন সমস্যা নেই। কিন্তু ত্রাণের শাড়ী আর টিন দিয়ে তৈরী স্বপ্ন প্রাসাদ যে ভেংগে পড়েছে সেই বোধ বোধ হয় এখনও তাকে স্পর্শ করেনি। মামলা হয়েছে কোর্টে। তিনি আবদার জানান ফখরুদ্দীন বরাবর। ঘটনা কি? খালি পেছনের দরজার ধান্ধা। কোর্টের মামলার মুখোমুখি হবেন কোর্টে। প্রধান উপদেস্টার কাছে আবদার কেন? জামাতীদের হঠাত করে জেলের জামাই আদরের প্রতি এতো অনীহা কেন? বড়োই নাফরমানী কথা। খোদার খেলের সাথে খোদ্দারির ধান্ধা!!!
Wednesday, May 02, 2007
রাজাকার নিয়ে দু'টি কথা:
(একই সাথে আড্ডার বাংলা পাতায় প্রকাশিত)
তর্ক বিতর্কে জড়াবার কোন ইচ্ছে বা রুচি নেই। সহজ বিষয়টিকে জটিল করারও প্রয়োজন নেই। যারা কথার মারপ্যাঁচ দিয়ে ৭১'এর রাজাকারের বিষয়টিকে জটিল করতে চায় তাদের সততা ও এথিক্যাল চাপের ব্যারোমিটার ব্লগে দেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। পানি ঘোলা করে মাছ ধরার কেরামতী যারা দেখিয়েছে তারা জানে এর ভেতরের মারফতী কাহিনী। সামরিক জিয়া বিসমিল্লাহ যোগ করে কিন্তু ঘাতক গোলাম আযমকেও দেশের ভেতর ঢুকিয়েছিলেন। স্বার্থ ছিল রাজনৈতিক।
হঠাত করে ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা রাজাকার মান্নানের কথা মনে পড়ল। তাকে একবার সাংবাদিকরা জিগ্যেস করল, "হুজুর আপনার পেপারে সিনেমার অ্যাড দেন কেন"? মান্নানের উততর খুব সাদামাটা ও স্পস্ট ছিল। উনি বললেন, "আমি তো ধর্ম প্রচারের জন্য পেপার খুলি নাই, পেপার খুলেছি বিজনেস করার জন্য"। তাই রাজাকার মান্নান অতীব সত্য কথা নির্লজ্জভাবে বলে দিয়েছেন যা এদেশের রাজনীতিবিদদের মুখোশ খুলে দেয়। ব্যবসার মতো রাজনীতির ধান্ধাও ক্ষমতায় যাওয়া। জনপ্রিয়তা পাওয়া। মানুষের বাহবা নেওয়া। সেই রাজনৈতিক ব্যবসায় রাজাকাররা পেয়ে যায় ক্ষমতার রুটি। খুবই সিম্পল ইকুয়েশন।
তাই, গণঘাতক রাজাকারদের নৃশংসতার কথা তাদের ইতিহাস রাজনীতির পালাবদলে চাপা পড়ে থাকে। তারপর ইতিহাসের জীর্ণ পাতায় বেরে উঠা উইপোকারা গ্রাস করতে চায় ইতিহাসের আলোকিত সত্যগুলোকে। রাজাকারদের বিচার হয়নি, তাই তারা নির্দোষ। রাজাকার জামাতীরা নেহাতই ধর্মভিততিক দল যারা ধর্মের ব্যবহার করে রাজনীতির স্বার্থে। ইনকিলাবের ব্যবসাযিক স্বার্থ আর জামাতীদের রাজনৈতিক স্বার্থ একাকার হয়ে যায়। সব বিভেদ ভুলে যায়। গো আযম, নিজামী, কামরুজ্জামান, সাঈদী সব জাতে উঠে। তারাও জনদরদী হয়। সমাজ সেবক হয়। আবারও মানুষের মুখোশ পড়ে মনুষ্য সমাজে বসবাসের সাহস দেখায়। কারণ?
কারণ, আমরা। আমরা যারা সাদা কালোর তফাতটাকে হালকা করতে চাই। রিকন্সিলিয়েশনের কথা বলে বিভ্রান্ত করতে চাই। তেল জল মেশে না। মেশানোর চেস্টা তাই বৃথা। রাগ, কস্ট, অভিমান, আবেগ দিয়ে রাজাকার প্রতিরোধ সম্ভব না। রাজাকার প্রতিরোধ করতে হলে সচেতন আর আপোষহীন প্রজন্মের দরকার। ইতিহাস সচেতন মানুষের দরকার। জনপ্রিয় সামাজিক এজেন্ডার দরকার। মানুষের দাবী যখন সোচ্চার হয়, ঐক্য যখন প্রবল হয়, তখনই রাজাকার প্রতিরোধ একটা প্রাতিস্ঠানিক চেহারা পাবে। জনপ্রিয় দাবীকে উপেক্ষা করার সাহস বা উপায় কারোই থাকে না। তাই, রাজাকার বিষয়টাকে, একাততরের বিষয়টাকে যারা লঘুভাবে হেলা করতে চান তাদেরকে নির্বুদ্ধিতার প্রতি করুণা জানাই। করুণা জানাই যারা অবলীলায় ধর্ম ভিততিক পোসট দিয়ে মানুষের ধর্মবোধকে প্রতারিত করে।
আমি হতাশ না। আমার এক সিনিয়র বন্ধুর সাথে যখন প্রথম দেখা তিনি বললেন, তোমরা জিয়ার শাসনামলের মানুষ। বিভ্রান্ত হও জিয়ার সামরিক ক্যারিশমা দেখে। তারপর দেখি সেই সিনিয়র বন্ধুটিরও ভুল ভাংগে। সেও দেখে জিয়ার ক্যারিশমা কিন্তু সবার মননকে প্রতারিত করতে পারেনি। ইতিহাস যেখানে জ্বলছে আলেকিত সুর্যের মতো, সেখানে কয়েক খন্ড মেঘ আর কিছু দমকা বাতাস এলোমেলো করতে পারে আজকের সকালের আয়োজন, কিন্তু তাই বলে পারে না সূর্যের আগমনকে ঠেকাতে। রাজাকার প্রতিরোধে সেই সূর্য সন্তানদের প্রণতি জানাই যারা এদেশের পতাকাকে এগিয়ে নিবে। যারা রাজাকারদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। ইতিহাসকে নতুন করে নির্মাণ করবে তাদের আপোষহীন হাত দিয়ে।
তর্ক বিতর্কে জড়াবার কোন ইচ্ছে বা রুচি নেই। সহজ বিষয়টিকে জটিল করারও প্রয়োজন নেই। যারা কথার মারপ্যাঁচ দিয়ে ৭১'এর রাজাকারের বিষয়টিকে জটিল করতে চায় তাদের সততা ও এথিক্যাল চাপের ব্যারোমিটার ব্লগে দেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই। পানি ঘোলা করে মাছ ধরার কেরামতী যারা দেখিয়েছে তারা জানে এর ভেতরের মারফতী কাহিনী। সামরিক জিয়া বিসমিল্লাহ যোগ করে কিন্তু ঘাতক গোলাম আযমকেও দেশের ভেতর ঢুকিয়েছিলেন। স্বার্থ ছিল রাজনৈতিক।
হঠাত করে ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা রাজাকার মান্নানের কথা মনে পড়ল। তাকে একবার সাংবাদিকরা জিগ্যেস করল, "হুজুর আপনার পেপারে সিনেমার অ্যাড দেন কেন"? মান্নানের উততর খুব সাদামাটা ও স্পস্ট ছিল। উনি বললেন, "আমি তো ধর্ম প্রচারের জন্য পেপার খুলি নাই, পেপার খুলেছি বিজনেস করার জন্য"। তাই রাজাকার মান্নান অতীব সত্য কথা নির্লজ্জভাবে বলে দিয়েছেন যা এদেশের রাজনীতিবিদদের মুখোশ খুলে দেয়। ব্যবসার মতো রাজনীতির ধান্ধাও ক্ষমতায় যাওয়া। জনপ্রিয়তা পাওয়া। মানুষের বাহবা নেওয়া। সেই রাজনৈতিক ব্যবসায় রাজাকাররা পেয়ে যায় ক্ষমতার রুটি। খুবই সিম্পল ইকুয়েশন।
তাই, গণঘাতক রাজাকারদের নৃশংসতার কথা তাদের ইতিহাস রাজনীতির পালাবদলে চাপা পড়ে থাকে। তারপর ইতিহাসের জীর্ণ পাতায় বেরে উঠা উইপোকারা গ্রাস করতে চায় ইতিহাসের আলোকিত সত্যগুলোকে। রাজাকারদের বিচার হয়নি, তাই তারা নির্দোষ। রাজাকার জামাতীরা নেহাতই ধর্মভিততিক দল যারা ধর্মের ব্যবহার করে রাজনীতির স্বার্থে। ইনকিলাবের ব্যবসাযিক স্বার্থ আর জামাতীদের রাজনৈতিক স্বার্থ একাকার হয়ে যায়। সব বিভেদ ভুলে যায়। গো আযম, নিজামী, কামরুজ্জামান, সাঈদী সব জাতে উঠে। তারাও জনদরদী হয়। সমাজ সেবক হয়। আবারও মানুষের মুখোশ পড়ে মনুষ্য সমাজে বসবাসের সাহস দেখায়। কারণ?
কারণ, আমরা। আমরা যারা সাদা কালোর তফাতটাকে হালকা করতে চাই। রিকন্সিলিয়েশনের কথা বলে বিভ্রান্ত করতে চাই। তেল জল মেশে না। মেশানোর চেস্টা তাই বৃথা। রাগ, কস্ট, অভিমান, আবেগ দিয়ে রাজাকার প্রতিরোধ সম্ভব না। রাজাকার প্রতিরোধ করতে হলে সচেতন আর আপোষহীন প্রজন্মের দরকার। ইতিহাস সচেতন মানুষের দরকার। জনপ্রিয় সামাজিক এজেন্ডার দরকার। মানুষের দাবী যখন সোচ্চার হয়, ঐক্য যখন প্রবল হয়, তখনই রাজাকার প্রতিরোধ একটা প্রাতিস্ঠানিক চেহারা পাবে। জনপ্রিয় দাবীকে উপেক্ষা করার সাহস বা উপায় কারোই থাকে না। তাই, রাজাকার বিষয়টাকে, একাততরের বিষয়টাকে যারা লঘুভাবে হেলা করতে চান তাদেরকে নির্বুদ্ধিতার প্রতি করুণা জানাই। করুণা জানাই যারা অবলীলায় ধর্ম ভিততিক পোসট দিয়ে মানুষের ধর্মবোধকে প্রতারিত করে।
আমি হতাশ না। আমার এক সিনিয়র বন্ধুর সাথে যখন প্রথম দেখা তিনি বললেন, তোমরা জিয়ার শাসনামলের মানুষ। বিভ্রান্ত হও জিয়ার সামরিক ক্যারিশমা দেখে। তারপর দেখি সেই সিনিয়র বন্ধুটিরও ভুল ভাংগে। সেও দেখে জিয়ার ক্যারিশমা কিন্তু সবার মননকে প্রতারিত করতে পারেনি। ইতিহাস যেখানে জ্বলছে আলেকিত সুর্যের মতো, সেখানে কয়েক খন্ড মেঘ আর কিছু দমকা বাতাস এলোমেলো করতে পারে আজকের সকালের আয়োজন, কিন্তু তাই বলে পারে না সূর্যের আগমনকে ঠেকাতে। রাজাকার প্রতিরোধে সেই সূর্য সন্তানদের প্রণতি জানাই যারা এদেশের পতাকাকে এগিয়ে নিবে। যারা রাজাকারদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। ইতিহাসকে নতুন করে নির্মাণ করবে তাদের আপোষহীন হাত দিয়ে।
Tuesday, May 01, 2007
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ:
ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক। ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ হোক। এগুলো কোন শ্লোগান নয়। ধর্ম নিয়ে অপকর্ম নতুন নয়। রাজনীতি আর দলীয় স্বার্থে ধর্মের ব্যবহারও নতুন নয়। আড্ডার পাতায় অসংখ্য বার লিখেছি কেন ধর্মভিততিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিত। ধর্মের মধ্যে রাজনীতির আবিস্কার ধর্ম ব্যবসায়ীদের এক নতুন হাতিয়ার। ইসলাম এধরনের ধর্ম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধার্মিকদের বিশ্বাসকে রক্ষা করার আহবান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে ধর্মের নামে কি পরিমাণ অপকর্ম হয়েছে তা নতুন করে বলার দরকার নেই। এই উপমহাদেশে ১৯৪১ সালের ২৬শে আগস্ট ধর্মভিততিক রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর গঠন হয়। তারপর থেকেই এরা ধর্মান্ধতার মাধ্যমে মুসলামানদের বিশ্বাসকে কলুষিত করেছে। জামাত জন্মলগ্ন থেকেই বৃটিশদের পদলেহন করেছে। বলেছে বৃটিশরা এই উপমহাদেশের শত্রু নয়। এই উপমহাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে দালালির ইতিহাস এভাবেই জামাতীরা শুরু করে। ইতিহাস সাক্ষী দিবে জামাতীদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশী।
জামাতের ডিগবাজীর ইতিহাস আরও চমকপ্রদ। ১৯৬১ সালে জামাতের গুরু মওদুদীর ফতোয়া ছিল নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ফাতেমা জিন্নাহকে রাস্ট্রপ্রধান করলে জামাতীদের ইসলাম বরবাদ হয়ে যাবে। সেই সময় মওদুদীর লেখা "বিংশ শতাব্দীতে ইসলাম" নামের পুস্তিকায় নারীদের রাস্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, "রাজনীতি, দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাপনা ও সামরিক খিদমত এবং এ ধরণের অন্যান্য কাজ পুরুষের। চোখ বন্ধ করে অন্যদের অজ্ঞতার অনুকরণ করা জ্ঞানের পরিচায়ক নয়। ইসলাম নীতিগতভাবে যৌথ সমাজ ব্যবস্থার বিরোধী। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এর অত্যন্ত খারাপ পরিণাম দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশের জনসাধারণও যদি তা ভোগ করার জন্য তৈরী হয়ে থাকে, তবে তা যত ইচ্ছে করতে পারে..."। এভাবে ফাতেমা জিন্নাহর রাস্ট্রপ্রধান পদ গ্রহণ করার বিরোধিতা করে ১৯৬৪ সালে ফাতেমা জিন্নাহর সাথে মোর্চা গঠন করে। সাথে সাথে ঘোষণা দেয়, মিস জিন্নাহর নেতৃত্বে ভোট না দিলে পাপ হবে। ১৯৬৪ সালের ১১ই অক্টোবর সাপ্তাহিক শেহাব পত্রিকায় মওদুদী তার ফতোয়া উল্টিয়ে বলেন, "মোহতারেমা ফাতেমা জিন্নাহকে নির্বাচন করায় এছাড়া কোন অসুবিধা নেই যে, তিনি একজন মহিলা। এদিক ছাড়া আর সব গুণাবলীই তার মধ্যে রয়েছে যা একজন যোগ্য রাস্ট্রপ্রধান প্রার্থীর জন্য বলা হয়েছে"। আর বাংলাদেশে বিএনপি জামাত জোট তো নারী নেতৃত্বকে স্বীকার করেই মোর্চা গঠন করে। এই হচ্ছে জামাতীদের রাজনৈতিক ইসলামের আসল চেহারা।
এই হচ্ছে জামাতীদের ইতিহাস। ক্ষমতার রুটির জন্য এরা নিজেদের স্বরচিত আদর্শ গ্রহণ ও ত্যাগ করার বাণিজ্য চালায়। তাই ধর্মের নামে এরা পড়ে নানান মুখোশ। বিভ্রান্ত করতে চায় মুসলিম উম্মাহকে। বিভক্ত করে মুসলমানদের। অস্ত্র তোলে, ভয় আর ভীতি দেখায়। প্রলোভন দেখায়। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের বদান্যতায় শুরু হয় জামাতীদের পঁচাততর পরবর্তী যাত্রা। তারপর থেকেই ব্যাংক, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার দিয়ে জামাত-শিবির তাদের প্রভাব বলয় তৈরী করেছে।
চট্রগ্রাম আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের দৌরাততের কথা কারও অজানা নেই। ধর্মভিততিক রাজনীতি যে কতোটা বিষাক্ত তা তুরস্ক, আলজেরিয়া আর আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক কালে প্রমানিত হয়েছে। আর আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতীদের হত্যাযজ্ঞের কথা কখনও ভুলব না। তাই প্রতিহত করতে হবে জামাতীদের সর্বত্র। যারা জামাতীদের তোষামোদ করেছে, প্রশ্রয় দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে তাদেরকেও চিন্হিত করে প্রতিহত করতে হবে। ধর্মের নামে অপকর্ম মানবতার সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে এগোতে হবে নতুন প্রজন্মকে।
বাংলাদেশে ধর্মের নামে কি পরিমাণ অপকর্ম হয়েছে তা নতুন করে বলার দরকার নেই। এই উপমহাদেশে ১৯৪১ সালের ২৬শে আগস্ট ধর্মভিততিক রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামীর গঠন হয়। তারপর থেকেই এরা ধর্মান্ধতার মাধ্যমে মুসলামানদের বিশ্বাসকে কলুষিত করেছে। জামাত জন্মলগ্ন থেকেই বৃটিশদের পদলেহন করেছে। বলেছে বৃটিশরা এই উপমহাদেশের শত্রু নয়। এই উপমহাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে দালালির ইতিহাস এভাবেই জামাতীরা শুরু করে। ইতিহাস সাক্ষী দিবে জামাতীদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশী।
জামাতের ডিগবাজীর ইতিহাস আরও চমকপ্রদ। ১৯৬১ সালে জামাতের গুরু মওদুদীর ফতোয়া ছিল নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ফাতেমা জিন্নাহকে রাস্ট্রপ্রধান করলে জামাতীদের ইসলাম বরবাদ হয়ে যাবে। সেই সময় মওদুদীর লেখা "বিংশ শতাব্দীতে ইসলাম" নামের পুস্তিকায় নারীদের রাস্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলে, "রাজনীতি, দেশের প্রশাসন ব্যবস্থাপনা ও সামরিক খিদমত এবং এ ধরণের অন্যান্য কাজ পুরুষের। চোখ বন্ধ করে অন্যদের অজ্ঞতার অনুকরণ করা জ্ঞানের পরিচায়ক নয়। ইসলাম নীতিগতভাবে যৌথ সমাজ ব্যবস্থার বিরোধী। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এর অত্যন্ত খারাপ পরিণাম দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশের জনসাধারণও যদি তা ভোগ করার জন্য তৈরী হয়ে থাকে, তবে তা যত ইচ্ছে করতে পারে..."। এভাবে ফাতেমা জিন্নাহর রাস্ট্রপ্রধান পদ গ্রহণ করার বিরোধিতা করে ১৯৬৪ সালে ফাতেমা জিন্নাহর সাথে মোর্চা গঠন করে। সাথে সাথে ঘোষণা দেয়, মিস জিন্নাহর নেতৃত্বে ভোট না দিলে পাপ হবে। ১৯৬৪ সালের ১১ই অক্টোবর সাপ্তাহিক শেহাব পত্রিকায় মওদুদী তার ফতোয়া উল্টিয়ে বলেন, "মোহতারেমা ফাতেমা জিন্নাহকে নির্বাচন করায় এছাড়া কোন অসুবিধা নেই যে, তিনি একজন মহিলা। এদিক ছাড়া আর সব গুণাবলীই তার মধ্যে রয়েছে যা একজন যোগ্য রাস্ট্রপ্রধান প্রার্থীর জন্য বলা হয়েছে"। আর বাংলাদেশে বিএনপি জামাত জোট তো নারী নেতৃত্বকে স্বীকার করেই মোর্চা গঠন করে। এই হচ্ছে জামাতীদের রাজনৈতিক ইসলামের আসল চেহারা।
এই হচ্ছে জামাতীদের ইতিহাস। ক্ষমতার রুটির জন্য এরা নিজেদের স্বরচিত আদর্শ গ্রহণ ও ত্যাগ করার বাণিজ্য চালায়। তাই ধর্মের নামে এরা পড়ে নানান মুখোশ। বিভ্রান্ত করতে চায় মুসলিম উম্মাহকে। বিভক্ত করে মুসলমানদের। অস্ত্র তোলে, ভয় আর ভীতি দেখায়। প্রলোভন দেখায়। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের বদান্যতায় শুরু হয় জামাতীদের পঁচাততর পরবর্তী যাত্রা। তারপর থেকেই ব্যাংক, হাসপাতাল, দাতব্য প্রতিষ্ঠান, সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার দিয়ে জামাত-শিবির তাদের প্রভাব বলয় তৈরী করেছে।
চট্রগ্রাম আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের দৌরাততের কথা কারও অজানা নেই। ধর্মভিততিক রাজনীতি যে কতোটা বিষাক্ত তা তুরস্ক, আলজেরিয়া আর আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক কালে প্রমানিত হয়েছে। আর আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামাতীদের হত্যাযজ্ঞের কথা কখনও ভুলব না। তাই প্রতিহত করতে হবে জামাতীদের সর্বত্র। যারা জামাতীদের তোষামোদ করেছে, প্রশ্রয় দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে তাদেরকেও চিন্হিত করে প্রতিহত করতে হবে। ধর্মের নামে অপকর্ম মানবতার সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে এগোতে হবে নতুন প্রজন্মকে।
Subscribe to:
Posts (Atom)